সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, বিভেদ ও বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণই মানবতাবাদী মতুয়া দর্শনের মূল তত্ত্ব। আর এটিই সব ধর্মের মূল সুর ও বাণী। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। তাই মানুষে মানুষ ভেদাভেদ থাকতে পারে না। ধর্মের নামে ও স্বার্থ সিদ্ধির জন্য মানুষ কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে সৃষ্ট শ্রেণি ও বর্ণ প্রথা তথা ভেদাভেদ বন্ধ করতে হবে।
শুক্রবার (২১ জুলাই) সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে মতুয়া সাহিত্য সমাজ, বাংলাদেশ আয়োজিত দিনব্যাপী ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক মতুয়া সাহিত্য সম্মেলন-২০২৩’ এর উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, শিক্ষা বিস্তার, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায় ও সাম্য স্থাপনে পূর্ণব্রহ্ম শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর মতুয়া দর্শন প্রবর্তন করেন। তাঁরই সুযোগ্য পুত্র শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর মতুয়া আন্দোলনকে সার্থকভাবে বাস্তবায়ন করেছিলেন। তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন সমাজের অবহেলিত, বঞ্চিত, সহায়-সম্বলহীন, মুক্তিকামী মানুষের জন্য। নিজেকে উৎসর্গ করেছেন মানব সেবায়-মানব প্রেমে।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মতুয়াসহ হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সকল ধর্ম-সম্প্রদায়ের রক্তের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।
কে এম খালিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন যে, বিশ্ব দুই ভাগে বিভক্ত শোষক ও শোষিত এবং তিনি ছিলেন শোষিতের পক্ষে। একইভাবে মতুয়া দর্শনও শোষিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী এসময় মতুয়া দর্শনের ওপর নির্মিতব্য প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মতুয়া গবেষক, কবি, লেখক এবং মতুয়া সাহিত্য সমাজ, বাংলাদেশ এর সভাপতি বিষ্ণুপদ বাগচীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা এবং সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল। আলোচনা করেন বিশিষ্ট মতুয়া গবেষক, লেখক ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হরি-গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপক ড. বিরাট কুমার বৈরাগ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক ড. স্বরোচিষ সরকার, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া গবেষক ও লেখক ড. মনোজ কাঞ্জিলাল, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হরিদাস ঠাকুর, বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ড. তপন কুমার বাগচী, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া কবি ও দার্শনিক গোপাল বিশ্বাস এবং ঢাকা আন্তর্জাতিক মতুয়া সাহিত্য সম্মেলনের যুগ্ম-আহবায়ক অ্যাড. উৎপল বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা আন্তর্জাতিক মতুয়া সাহিত্য সম্মেলন-২০২৩ এর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মিন্টু কুমার মণ্ডল। শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন মতুয়া সাহিত্য সমাজ, বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. পবিত্র মিস্ত্রী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মতুয়া শশাংক বর ও আশিস কুমার বাকচী।
ঢাকা আন্তর্জাতিক মতুয়া সাহিত্য সম্মেলন ২০২৩ -এর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘কলমের টানে মিলনের গানে, প্রজ্ঞার স্পন্দনে জাগ্রত হোক মতুয়া সমাজ’।