লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সাবেক যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমামের নামাজে জানাযা শেষে তাদের নিজ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৫ টার দিকে সদর উপজেলার বশিকপুর ডি এস ইউ কামিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে প্রথম ও দ্বিতীয় নামাজে জানাযা শেষে অশ্রুসিক্ত চোখে শেষ বিদায় জানান সর্বস্তরের মানুষ। জানাযায় প্রায় ৫ হাজার মানুষ অংশ নেন। এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে জোড়া এ খুনের ঘটনার বিচার দাবী করেন স্বজন ও এলাকাবাসী। তবে সন্ত্রাসীদের ভয়ে মুখ খুলছেনা অনেকে। এদিকে খুনিদের গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণের হুশিয়ারি দিয়েছে সদর উপজেলা যুবলীগ পশ্চিম শাখার নেতারা। অন্যদিকে এদিন সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি। তবে খুনিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। সরেজমিন নিহতদের বাড়ীতে গিয়ে দেখা গেছে পরিবারের নারী সদস্যরা প্রিয়জন হারিয়ে হতবিহ্বল অবস্থায় এলামেলো পড়ে আছেন। গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য দিয়ে লাভ কি হবে এমন বিশ^াসে বক্তব্য দি”েছনা কেউই। তবে নোমানের বড় শিশু সন্তান নুহাদ জেহাদী নামের কাউকে দায়ী করে তার বাবার হত্যার বিচার দাবী করেন। নোমানের ভাই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান হত্যাকান্ডের ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী আবুল কাশেম জেহাদী ও তার বাহিনীকেই দায়ী করেন। জানাযা নামাজ পূর্ব বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে এ বাহিনী অচিরেই নিমূল করার দাবী তোলেন তিনি। এদিকে অপর নিহত রাকিবের বাবা রফিক উল্লাহ ও ভাই রুবেল হোসেন একই অভিযোগ করে হত্যাকান্ডের বিচার চান সরকারের কাছে। নাম প্রকাশে অনিশ্চুক অনেকেই ওই নামটি উল্লেখ করে তার বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরে বশিকপুরের মানুষ অসস্তিতে রয়েছে বলে জানান। এসময় জানাজা পূর্ব বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, আওয়ামী লীগ নেতা এম আলাউদ্দিন, মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সাত্তার, কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপ পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সামছুল ইসলাম পাটওয়ারী, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবীর পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হাসান পলাশ। প্রসঙ্গত : মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) রাত পৌনে ১০ টার দিকে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের নাগেরহাট এলাকায় সন্ত্রাসীরা যুবলীগ নেতা নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে গুলি করে হত্যা করে। এসময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মোবাইল নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থল গিয়ে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাদের পুথক হাসপাতালে মৃত ঘোষনা করেন। তাদের মাথায় ও মুখে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে বলে জানান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ারে হোসেন। নিহত নোমান সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি (নোমান) প্রস্তাবিত জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক। অপর নিহত রাকিব বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা- একই ইউনিয়নের নন্দীগ্রামের রফিক উল্যার ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। নিহত নোমানের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান রয়েছে অপর নিহত রাকিবের স্ত্রী ও ৭ মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে বলে জানা যায়।