সদ্য সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগকারী নারীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের খলসী বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা খলসী এলাকার বাসিন্দারা স্থানীয় নারী সালমা খাতুনের অত্যাচারে অতীষ্ট। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই নারী নির্যাতন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়। গত কয়েকদিন আগে পুলিশের একটি দল আমাদের গ্রামে খোঁজ-খবর নিতে আসলে আমরা যা জানি তাই বলেছি। এরপর থেকেই আমাদেরকে মুঠোফোনে ও সরাসরি নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে সালমা খাতুন। আমরা মামলার ভয়ে আতঙ্কে দিন পার করছি। দীর্ঘদিন ধরে ওই নারী একের পর এক লোককে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসাচ্ছে। বক্তারা আরও বলেন, এর আগে খলসী গ্রামের বাসিন্দা ও সামলার প্রতিবেশী লোকমান মেম্বারের ছেলে খলিলুর রহমান পপেলের বিরুদ্ধে সালমার মা বাদি হয়ে আদালতে ধর্ষণ মামলা করে। যা পরে মিথ্যা মামলা বলে প্রমাণিত হয়। একই গ্রামের মেসবাউল হক বাবুর বিরুদ্ধেও একটি মামলা করেন সালমা খাতুন, যা পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে আপোষ-মিমংসা হয়। বিভাস নামের ঢাকার এক ব্যক্তি সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে স্থানীয়ভাব শালিসে সালমা খাতুনের ৫০ লাখ টাকার দাবির প্রেক্ষিতে ১০ লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে সমাধান করেন। মানববন্ধনে স্থানীয় এলাকাবাসী আরও বলেন, ২০২১ সালে ভেটেরিনারি সার্জন আলমগীর হোসেনকেও ওসি সেলিম রেজার মতো করেই ফাঁসিয়ে বিয়ের দাবি জানায়। পরে তাতে রাজি না হলে আদালতে ওই ভেটেরিনারি সার্জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন সালমা খাতুন। পরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে স্থানীয়ভাবে সমাধান হয়। একইভাবে ওসি সেলিম রেজাকেও ফাঁসানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অথচ ওসি সাহেব ভালো মানুষ। আমরা এমন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। সেই সাথে সেই নারীর কঠোর শাস্তি দাবি করেন স্থায়ীয়রা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য টুকু, স্থানীয় বাসিন্দা লসকোর আলী, হাবিবুল্লাহ সিপন, আশরাফুল ইসলাম সুজন, ওমর ফারুক, আল আমিনসহ অন্যান্যরা। এসময় ফতেপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন বয়সী জনসাধারণ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। এবিষয়ে সালমা খাতুন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এলাকায় নাই, তাহলে হুমকি দিলাম কিভাবে? আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এসব মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। ওসিকে বাঁচাতেই এসব মানববন্ধন করা হয়েছে ও আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ওসি সেলিম রেজার বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেন সালমা খাতুন। এ ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত করে ওসি সেলিম রেজাকে সাময়িক বরখাস্ত করে চট্রগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। গত ২২ মার্চ ডিআইজি ও ২৩ মার্চ জেলা পুলিশ সুপার বরাবর ওসি সেলিম রেজার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন সালমা খাতুন। এসব অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ।