ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুরের ডৌহাখলা ইউনিয়নের ইতিবৃত্ত গবেষণা ও বিভিন্ন অনুসন্ধানী কাজ সম্পন্ন করেছে গৌরীপুরস্থ এসিক এসোসিয়েশন, ক্রিয়েটিভ এসোসিয়েশন এবং দি ইলেক্টোরাল কমিটি ফর পেন অ্যাওয়ার্ড অ্যাফেয়ার্স।
গবেষণার তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, এই দহনখলাকে কেন্দ্র করে স্থানটির নাম হয় ডৌহাখলা। ১৭৮৭ সালে বিশাল ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ পরিবর্তনে তার একটি শাখা নদী অর্থাৎ রেনেলের অংকিত দুই তিন কিলোমিটার প্রশস্থের সোহাই নদী শত বছর আগে গাজীপুর, রাঘবপুর, বিসকা, কলতাপাড়া এলাকায় মরা গাঙ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। ১৭৮৭ এর আগে জেমস রেনেল তার মানচিত্রে বিভিন্ন নদীর অবস্থান চিহ্নিত করে গেছেন। গৌরীপুরের ডৌহাখলা ইউনিয়নের গাজীপুরের আশেপাশে কিছু জায়গায় এখনও ইতিহাসের গন্ধ লেগে আছে। তবে প্রত্ননিদর্শন হিসেবে এখানে চারটি ইতিহাসের শেকড় রয়েছে। তাই প্রত্ননিদর্শনগুলো বর্তমানের মানুষকে নিয়ে যায় অতীত ইতিহাসের কাছে। এজন্য প্রত্ননিদর্শন হলো ‘ইতিহাস ঐতিহ্যের শেকড়’। গাজীপুরের সন্নিকটে মুঘল ও পাঠান আমলে স্থাপত্য রীতিতে তৈরি ভবের খেলা কাচারি নামে রাজপ্রাসাদ রয়েছে যা জমিদারের আমলে এটি কাচারি অফিস। যা বিনোদন কেন্দ্র ও খেলাঘর হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। এর পাচঁশত গজ পশ্চিমে রয়েছে চিকন বা ছোট ছোট ইট দ্বারা নির্মিত একটি প্রাচীন ঘর। পূর্বে আরো ঘর ও বাউন্ডারিসহ ফটক ছিল বলে জানা যায়। তখনকার দিনে এই বাউন্ডারীর ভিতরে মৃৎশিল্পের কারখানা বা খলা ছিল বলে ধারণা করা হয়। ঐতিহাসিক জায়গাটি বর্তমানে চৌধুরী বাড়ি ও ভূইয়া বাড়ির এলাকা হিসেবে পরিচিত।
এবারে আসা যাক সেই সান্যাল জমিদারবাড়ির কথায়। গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড হতে দুই কিলোমিটার দক্ষিণে ডৌহাখলা বাজার। এর পাশে বিদ্যমান ইংরেজ আমলের সান্যাল জমিদার বাড়ির অবশিষ্টাংশ। তাছাড়া কলতাপাড়া বাসস্ট্যান্ডের উত্তরে রয়েছে মুঘল বা পাঠান আমলের পরিত্যক্ত গুজি খাঁর বাংলো বাড়ি যা লোকমুখে গুজু মোড়লের অভিশপ্ত বাড়ি হিসেবে পরিচিত। ঈশা খাঁ বা খাজা উসমান খাঁর আমলে গাজীপুর ছিল বিখ্যাত স্থান। তাই গাজীপুর এলাকায় একটি ঐতিহাসিক সংগ্রহশালার জন্য কিছু জায়গা নিয়ে আফগান সেনা ও গাজীদের প্রতিকৃতি এবং ইতিহাসের চারটি শেকড়ের প্রতিকৃতি তৈরি করে কিছু ঐতিহাসিক মনুমেন্ট দেখার প্রয়োজন মনে করছেন বর্তমান প্রজন্মরা।
ডৌহাখলা জমিদার বাড়িঃ
ময়মনসিংহ ব্রিজ থেকে কিশোরগঞ্জ সড়কের বরাবর মাত্র ১২ কিলোমিটার পূর্বে এবং গৌরীপুর উপজেলার শহর থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে গাজীপুর বাসস্ট্যান্ডের অবস্থান। গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড হতে দুই কিলোমিটার দক্ষিণে ডৌহাখলা বাজারের কাছে পূর্ব পাশে চোখে পড়বে কতকগুলো পুকুর ও পুরাতন বাউন্ডারিসহ একটি বড় বাড়ি। কিন্তু বাউন্ডারির ভিতরে নেই সেই সান্যাল ব্রাহ্মণ পরিবারের পুরাতন কারুকার্যসহ রাজপ্রাসাদ ও কাচারি বাড়িটি। তবে ডৌহাখলা জমিদারদের নির্মিত পুরাতন বাউন্ডারি, পাখিদের বসবাসের জন্য নিরিবিলি জায়গা ও কোলাহলমুক্ত পরিবেশ, ইন্দিরা এবং পুকুরগুলো তাদের জমিদারির শাসন ও গৌরবময় অতীতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বর্তমান এই বাড়িটিতে একটি মুসলিম পরিবার বসবাস করে।
ডৌহাখলা জমিদার বাড়ির গোড়াপত্তনের ইতিহাসঃ
বোকাইনগর বাসাবাড়ির জমিদার রুদ্রচন্দ্র চৌধুরীর পৌত্র (কন্যার দিকে নাতি) কৃষ্ণচন্দ্র সান্যাল ডৌহাখলায় এসে তিনি বাসস্থান নির্মাণ করেন এবং পরে তিনি ডৌহাখলা জমিদারির গোরাপত্তন করেন। জমিদার রুদ্রচন্দ্র চৌধুরীর তিন পুত্র ও তিন কন্যার জনক ছিলেন। কন্যারা হলেন গোলকমণি, কমলমণি ও কুমারী দেবী। গোলকমণি ও কমলমণি অবিবাহিতা অবস্থাতেই পরলোক গমন করেন। গুরুচরণ সান্যাল নামে এক রাজপুত্র রুদ্রচন্দ্র চৌধুরীর কন্যা কুমারী দেবীকে বিয়ে করে একটি জমিদারির তালুকপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। কুমারী দেবীর গর্ভে মহেশচন্দ্র সান্যাল ও কৃষ্ণচন্দ্র সান্যাল নামে দুই পুত্র জন্মগ্রহণ করেন। কৃষ্ণচন্দ্র সান্যাল ছিলেন ডৌহাখলার প্রথম জমিদার।
বাসাবাড়ি জমিদার রুদ্রচন্দ্র চৌধুরীর তিন পুত্রের পরিচিতিঃ
গৌরীপুরের বোকাইনগর বাসাবাড়ি হতে আরো তিনটি রাজবাড়ি প্রতিষ্ঠিত হয়। জমিদার রুদ্রচন্দ্র চৌধুরীর ছিল তিন পুত্র। তারা হলেন হরচন্দ্র চৌধুরী, ভৈরবচন্দ্র চৌধুরী ও কেশবচন্দ্র চৌধুরী। কেশব চন্দ্র চৌধুরীকে রামগোপালপুর জমিদারবাড়ির প্রয়াত রামকিশোর রায়চৌধুরীর বিধুবা স্ত্রী জগদীশ্বরী দেবী দত্তকপুত্ররূপে গ্রহণ করেন এবং দত্তকপুত্রকে কালীকিশোর রায় চৌধুরী নাম রাখেন। এই দত্তক প্রদানের বিনিময়ে রুদ্রচন্দ্র চৌধুরী বগুড়ার কড়ই (করৈ) গ্রামে তাদের আদি রাজবাড়ির এজমালি সম্পত্তি হতে ২ (দুই) আনা অংশ জগদীশ্বরী দেবীর নিকট হতে প্রাপ্ত হন।
এ সম্পর্কে ধারণা করা যায় যে, রামগোপালপুরের জমিদার কালীকিশোর রায় চৌধুরীর ভাগ্নে কৃষ্ণচন্দ্র সান্যাল এবং তার ছেলে প্রখ্যাত জমিদার কাশীকিশোর রায় চৌধুরী সম্পর্কে তার মামাতো ভাই। মাতামহ (নানা) রুদ্রচন্দ্র চৌধুরীর মৃত্যুর পর কৃষ্ণচন্দ্র সান্যালের আরো দুই মামা হরচন্দ্র চৌধুরী ও ভৈরবচন্দ্র চৌধুরী সমস্ত সম্পত্তির অধিকারী হন। দুই মামার মধ্যে দু’টি জমিদার বাড়ি গঠিত হয়েছিল। পিতার মৃত্যুর পরেও কিছুদিন উভয় ভাই একত্রে ও প্রীতি বন্ধনে বোকাইনগর বাসাবাড়িতে বসবাস করতেছিলেন। পরে ভ্রাতৃবিরোধ ও আত্মকলহে এই পরিবারের বন্ধন পৃথক হয়ে যায়। হরচন্দ্র চৌধুরী বাসাবাড়িতেই রইলেন। ভৈরবচন্দ্র চেীধুরী বোকাইনগর বাসাবাড়ি ত্যাগ করে আধা কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত ভবানীপুর গ্রামে বাসস্থান তৈরি করে চলে আসেন।
জমিদার শ্রী শৌরীন্দ্র্র কিশোর রায়চৌধুরীর ১৯১১ সালে প্রকাশিত ‘ময়মনসিংহের বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ জমিদার’ গ্রন্থে ডৌহাখলা জমিদার বাড়ির সংক্ষিপ্ত বিবরণের কথা উল্লেখ রয়েছে। ডৌহাখলা জমিদার কৃষ্ণচন্দ্র সান্যালের পারিবারিক সম্বন্ধে তার কিছু উদ্ধৃতি দেওয়া হলো –“যোগেশচন্দ্রই বর্তমানে ডৌহাখলার জমিদার। তিনি বেথুর নিবাসী রোহিণীকান্ত ভট্টাচার্যের কন্যা সরলা দেবীকে বিবাহ করিয়াছেন। রুদ্রচন্দ্র চৌধুরি জীবিতাবস্থাতেই পুত্রদ্বয়ের জমিদারিতে নামজারি করান। রুদ্রচন্দ্র দক্ষতার সহিত জমিদারি কার্য পরিচালনা করিয়া যথাকালে মানবলীলা সম্বরণ করেন।” গোড়াপত্তন ইতিহাসের কঙ্কালটি তৈরি হলেও তাতে তা সম্পূর্ণ করতে রক্তমাংসগুলো কি করে দেওয়া যায় তাই তো ভাবনার বিষয়। তাই ডৌহাখলা জমিদারির উৎপত্তিসহ ইতিবৃত্ত গবেষণা ও বিভিন্ন অনুসন্ধানী কাজ করে যাচ্ছে এসিক অ্যাসোসিয়েশন, ক্রিয়েটিভ এসোসিয়েশন এবং দি ইলেক্টোরাল কমিটি ফর পেন অ্যাওয়ার্ড অ্যাফেয়ার্স। বর্তমান (২০২৩) ইতিহাস ও ঐতিহ্যের শেকড়সন্ধানী তথ্য ও পরবর্তী বংশতালিকা ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করা হলো। ১৯১১ সালের পর যোগেশচন্দ্র সান্যাল-এই নামটির সঙ্গে অনেক বৃদ্ধ লোকের কাছে পরিচিত ছিল। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হলে তাঁর পরিবার ভারতে চলে যায়। আজ (২০২৩) থেকে ৭৫ বছর আগের জমিদার বাড়ি থেকে আজকের বাড়িটি কত তফাৎ! তথ্যসংগ্রহের কাজটি বেশি দেরি হয়ে গেলো। এখন নেই সেই জমিদারবাড়িও, গ্রামে নেই সেই জমিদারবাড়ির উত্তরসূরী।
জরিপকালীন গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে জমিদার বাড়ির ইতিহাস নিয়ে কথা হয়। প্রায় সাত একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই জমিদারবাড়ি। এ গ্রামের নিবাসী ও বর্তমান বাড়ির মািলিক মোঃ আজিজুল হক (নয়ন মিয়া) অতীতের স্মৃতি ঘেটে বলেন, স্বাধীনতার আগে ডৌহাখলার তৎকালীন জমিদার সান্যালদের আর্থিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি (প্রায় ৭ একর) জমিদারবাড়িটি কিনে নেন। বাড়িটি কেনা ও ৪০ বছরের জমি সংক্রান্ত মামলা বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে প্রসঙ্গক্রমে এসেছে যোগেশচন্দ্র সান্যালের দুই মেয়ে ও একমাত্র পুত্র জ্যোতিষচন্দ্র সান্যালের কথা। এই বংশতালিকাটি দেখেছিলে বাড়ির মালিক আজিজুল হক নয়ন মিয়া।
তিনি বলেন, যোগেশচন্দ্র সান্যাল একমাত্র পুত্র জ্যোতিষচন্দ্র সান্যালের দুই বা তিন পুত্র – জগদীশচন্দ্র সান্যাল (রবি বাবু) , অনিমেশচন্দ্র সান্যাল (মুকুল বাবু) ও পরমেশচন্দ্র সান্যাল । ভারত থেকে ফিরে আসা বংশধরের একাংশ বর্তমানে ময়মনসিংহ শহরে বসবাস করছে। অনিমেশ চন্দ্র (মুকুল সান্যাল) ময়মনসিংহ শহরে প্রয়াত হন। মুকুল সান্যালের চার ছেলের মধ্যে দুই ছেলে অনিরুদ্ধ সান্যাল ও অসমঞ্জস সান্যাল ময়মনসিংহ শহরে বসবাস করতেছিলেন। অনিরুদ্ধ সান্যাল কৃষি ডিপ্লোমা পাশ করে তিনি ময়মনসিংহ কৃষি অফিসের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। দীর্ঘ চাকরি জীবনের শেষ লগ্নে তিনি সসম্মানে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণের দুই-তিন বছরের মধ্যে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। যোগেশচন্দ্র সান্যালের দুই মেয়ের মধ্যে এক মেয়ে বাগচী পরিবারে এবং ২য় মেয়ে ভাদুড়ী পরিবারে বিয়ে হয়। এই বাড়িটি ভারতের প্রখ্যাত অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন তাঁর স্ত্রী অভিনেত্রী জয়া ভাদুড়ীর মামার গোষ্ঠী নামে পরিচিত।
সান্যাল, মৈত্র, ভাদুড়ী, বাগচী ও লাহিড়ীরা বরেন্দ্রী ব্রাহ্মণ নামে পরিচিত। এই প্রত্যেকটা পদবীই আসলে গাঁয়ী পদবী। এর কোন আক্ষরিক অর্থ নেই; এর উৎস হচ্ছে আদতে একটা গ্রামের নাম। নওগাঁ জেলার বলিহার রাজবংশের ইতিহাসেই সান্যালকে উপাধি হিসেবে ধারন করার দৃষ্টান্ত আছে।
একসময়ে গৌরীপুর শহরে বসবাসকারী প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ হেমান্ত কুমার সান্যালের ছেলে অরুণ কুমার সান্যাল (শম্ভু) বলেন, ডৌহাখলা সান্যাল জমিদার বাড়ির বংশোধর তাদের আত্নীয় স্বজন। পূর্বধলায় রয়েছে তাদের আদি বাড়ি। গৌরীপুর উপজেলার উত্তরে পূর্বধলা উপজেলার অন্তর্গত বাঘবেড় জমিদার বাড়ির অবস্থান। বাঘবেড় গ্রামে ভাদুরী বাড়ির সাথে ছিল সান্যাল বাড়ি। বাঘবেড়ের শেষ জমিদার বংশের দুই ভাই সুধীর কুমার ভাদুড়ী ও তরুণ কুমার ভাদুড়ী। (প্রসঙ্গত, অমিতাভ বচ্চনের স্ত্রী অভিনেত্রী জয়া ভাদুড়ী হলেন বিখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক তরুণকুমার ভাদুড়ীর মেয়ে)। আর সান্যাল বাড়িতে ছিলেন গীতেশ চন্দ্র স্যানাল এবং তার এক মাত্র ছেলে কালীকুমার সান্যাল । কালীকুমার সান্যালের পাচঁ ছেলে ডাঃ ননিলী সান্যাল, নরেন্দ্র চন্দ্র সান্যাল, নৃপেন্দ্র চন্দ্র সান্যাল খীতেশ চন্দ্র সান্যাল, নগেন্দ্র চন্দ্র সান্যাল। ডাঃ ননিলী সান্যালের দুই ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ হেমান্ত কুমার সান্যাল ও প্রফুল্ল কুমার সান্যাল এবং তাদের বোন নামকরা সংবাদপাঠিকা নীলিমা সান্যাল। বহুদিন দিল্লিতে ও আকাশবাণী রেডিওর সংবাদ পাঠিকা হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৬০-৭০ বা ৮০র দশকে আকাশবাণীর সংবাদ পাঠকদের মধ্যে কয়েকজনের নাম অনেকের মনে গেঁথে গিয়েছিল। দেশ বিদেশের সংবাদ পাঠকদের মধ্যে নীলিমা সান্যাল অন্যতম ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গণমাধ্যম হিসেবে রেডিওর ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। এমনকি গণঅভ্যুত্থানের ১৯৬৯ সালে ২৭ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে গৌরীপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে হারুন নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আকাশবাণী বেতারকেন্দ্র থেকে খবর পাঠ করেন নীলিমা সান্যাল। (যেমন- ” আকাশবাণী –, খবর পড়ছি নীলিমা সান্যাল । আজকের বিশেষ বিশেষ খবর হল ……… ।”) নীলিমা সান্যালের জ্ঞাতিগোষ্ঠী ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা ও গৌরীপুরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তার ভাই প্রফুল্ল কুমার সান্যাল ছিলেন শিলিগুড়িতে নর্থ বেঙ্গল স্ট্যাট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশেনের চেয়ারম্যান।
১৯৪৭ সালের পর পূর্বধলা হতে গৌরীপুর রেল স্টেশনের কাছে সিংহ উপাধি বংশধরের বসবাসের তথ্য পাওয়া যায়। তারা ছিলেন পূর্বধলার জমিদার বংশধর। শম্ভু সান্যাল ও মিহির বাগচীর মামা ছিলেন মধু সিংহ। ডৌহাখলা জমিদার বাড়ির সঙ্গে তাদের একটা আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছে অরুণ কুমার সান্যাল (শম্ভু)। শম্ভু সান্যালের কথায়, অবিভক্ত বাংলার নেত্রকোণার পূর্বধলায় অভিনেত্রী জয়া ভাদুড়ীর বাবা তরুণ কুমার ভাদুড়ীর জন্ম। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হলে ব্রাহ্মণ পরিবারের সদস্যরা ধীরে ধীরে মাইগ্রেট করতে শুরু করে এবং পশ্চিম বাংলায় চলে আসে। বিভিন্ন মিডিয়ায় বৃহত্তর ময়মনসিংহে জয়া ভাদুড়ীর মা ও বাবার বাাড়ীর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। আজও নির্দ্বিধায় অনেকে স্বীকার করেন জয়া ভাদুড়ীর মামার জ্ঞাতিগোষ্ঠীর শেকড় গৌরীপুরের ডৌহাখলায়।