প্রতারণার কৌশলটি অভিনব। যাদের বিকাশ একাউন্ট আছে, তাদেরকেই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করত প্রতারক চক্রটি। শুধু তাই নয়, বিকাশ একাউন্ট হ্যাক এবং সরকারি কর্মকর্তা সেজে কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ করত চক্রের সদস্যরা। অবশেষে ওই চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা পৃথক দুটি মামলার আসামি।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. মোস্তাক হাওলাদার (৩০), আব্দুল হালিম ফরাজী (২২), কপাল ওরফে মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার (২৯), মো. সুজন শেখ (২২), হৃদয় মাতুব্বর হেলাল মাতুব্বর (২৪), মো. তুহিন সরদার (২৫) ও মো. সজিব আকশ (২১)।
গ্রেফতারকৃত মো. মোস্তাক হাওলাদার, আব্দুল হালিম ফরাজী, কপাল ওরফে মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার ও মো. সুজন শেখ বিকাশের কর্মকর্তা সেজে প্রবাসী কার্ড নামক মোবাইল এ্যাপস ব্যবহার করে বিকাশের বিটুবি নম্বর ক্লোন করে ভিকটিমকে ফোন করে। এছাড়া ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রলোভনের মাধ্যমে মোবাইলের ওটিপি নম্বর নিয়ে কৌশলে বিকাশ এজেন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। তারা এক ভিকটিমের কাছ থেকে ৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়। এর প্রেক্ষিতে লালবাগ (ডিএমপি) থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরেকটি ঘটনায় হৃদয় মাতুব্বর হেলাল মাতুব্বর, মো. তুহিন সরদার ও মো. সজিব আকশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা প্রথমে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি কল্যাণ বোর্ডের আর্থিক অনুদানপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারিদের নামের তালিকা বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি কল্যাণ বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে সরকারি কর্মকর্তা সেজে মোবাইলে কল দিয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি কল্যাণ বোর্ডের আর্থিক অনুদান হয়েছে মর্মে সরকারি কর্মচারিদেরকে আশ্বস্ত করেন এবং তাদের এটিএম কার্ড থাকলে সেই কার্ডের নম্বর প্রতারকদের কাছে পাঠাতে বলেন। ভিকটিমরা সরল বিশ্বাসে এটিএম কার্ডের নম্বর তাদেরকে দিয়ে দেয়। প্রতারকরা এক পর্যায়ে সুকৌশলে তাদের মোবাইল ফোনে প্রতারকদের পাঠানো ওটিপি নম্বর জেনে নেয়। এভাবে প্রতারকরা ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এর প্রেক্ষিতে ডিএমপির রামপুরা থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই মামলার তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি কর্মচারি কল্যাণ তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থ এবং বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেফতারকৃত চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ এবং প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে বিজ্ঞ আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।