প্রোটিয়াদের ডেরায় বাঘের থাবা দেখেছে বিশ্ব। তাতেই ভেঙে চুরমার টেম্বা বাভুমার দল। ইতিহাস গড়া এক জয়ে লাল সবুজের শিবির আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বুর। যে দল আগে কখনো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জেতেনি, সেই দল প্রথম জয়ের পরই এখন দেখছে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন। দলের অন্যতম ক্রিকেটার, প্রথম ম্যাচ জয়ের অন্যতম নায়ক মেহেদি হাসান মিরাজতো বলেই দিয়েছেন, সিরিজ জয় নয় শুধু; বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন দেখছে এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ জেতার।
এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ পরের ব্যাপার। আপাতত দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজেই থাকা যাক। সেঞ্চুরিয়নে জয়ের মহাকাব্য লেখার পর এবার ওয়ান্ডারার্সে রোববার (২০ মার্চ) দুপুরে তামিম ইকবালের দল নামবে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে। বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় শুরু হবে খেলা। প্রথম ম্যাচ ডে-নাইট হলেও এটি হবে ‘ডে ম্যাচ।’
প্রথম ম্যাচ জয়ের পর আজ শনিবার বাংলাদেশ দল বিশ্রামে কাটিয়েছে। ব্যাট-বল নিয়ে টুং-টাং না করে তামিম-সাকিবরা নিজেদের মতো করে সময় কাটিয়েছেন। ‘মিরাজের কণ্ঠে ভাসছে আত্মবিশ্বাস। জানিয়েছেন দেশের বাইরে সিরিজ জিততে চায় বাংলাদেশ। হ্যাঁ, দেখেন স্বপ্ন যদি বড় না থাকে তাহলে তো আগানো যায় না। আমাদের স্বপ্ন অনেক বড়। আমরা ভালো কিছু করতে চাই। দেশে যেমন সিরিজ জিতি বাইরেও আমরা সিরিজ জিততে চাই।’
টিম গেম খেলে প্রথম ম্যাচে সাফল্য এসেছে। দ্বিতীয় ম্যাচেও একইভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার কোনো বিকল্প নেই। মিরাজের মতে বাংলাদেশ যখন টিম গেম খেলে তখনি জিতে যায়, ‘আমাদের কাল যেটা হয়েছে আমরা টিম গেম খেলেছি। আমরা যখন টিমে গেম খেলি তখনই বাংলাদেশ জিতে যায়।’
নিজেদের মাটিতে হেরে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন আহত বাঘ। তারা হামলে পড়বে বাংলাদেশের ওপর; এটা এক প্রকার নিশ্চিত। ওয়ান্ডারার্স দক্ষিণ আফ্রিকার পয়া ভেন্যু। চেনা পরিবেশ, চেনা কন্ডিশন। সবকিছুই তাদের পক্ষে। এখন পর্যন্ত এই মাঠে ৫০টি ওয়ানডে হয়েছে। তার মধ্যে ৩৭টি খেলে ২৭টিতে জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৩ ম্যাচে জয় নিরপেক্ষ দেশের। ব্যাটিং স্বর্গ হিসেবে পরিচিত এটি। দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ৪৩৮ রানের সেই বিখ্যাত ম্যাচ এখানেই হয়েছে। ওভার প্রতি গড় রান এখানে ৫.২০ করে।
মাঠের পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে এই মাঠে জয় পেতে হলে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আবার জ্বলে উঠতে হবে। তার সঙ্গে থামাতে হবে ডেভিড মিলার কিংবা ভ্যান ডার ডুসেনদের। তারা জ্বলে ওঠার আগেই নিভিয়ে দিতে হবে। না হয় রান বন্যায় ভাসতে হবে।
এই ম্যাচে একাদশে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই। অর্থ্যাৎ ৩ পেসার নিয়ে দল সাজাতে পারে বাংলাদেশ। এ ছাড়া স্পিনার হিসেবে মিরাজের সঙ্গে আছেন সাকিব। ব্যাটিংয়ে তামিম থেকে শুরু করে মিরাজ পর্যন্ত ৮ জনই ব্যাটিংয়ে পারদর্শী।
আইসিসি বিশ্বকাপ সুপার লিগে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। আর দক্ষিণ আফ্রিকার তলানিতে। বাংলাদেশের বিপক্ষে যে কোনোভাবে জয় তুলে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে মরিয়া স্বাগতিক দল। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচও হারলে বিশ্বকাপে সরাসরি যাওয়া নিয়ে সংশয়ে পড়তে হতে পারে প্রোটিয়াদের।
অধিনায়ক বাভুমা বলেন, ‘রোববার আমাদের ম্যাচ জেতা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমাদের সব বিভাগকে ভালো পারফরম্যান্স করতে হবে। আমি যে সব পয়েন্ট অর্জন করেছি তা দেখেছি। আমাদের ওই খেলাটাই খেলতে হবে যেটা আমরা জানি এবং আমরা পারি।’
আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান বাংলাদেশ কি পারবে আহত প্রোটিয়াদের আবার হারাতে? এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে যে রাত অব্দি!
বাংলাদেশ সম্ভাব্য একাদশ:
তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ইয়াসির আলী, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম।