এভাবেও হারা যায়? ক্রিকেটপ্রেমীরা যদি বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারকে সামনে পেয়ে এই প্রশ্ন করেন, হয়তো ভুল করবেন না। দুই ইনিংস মিলিয়ে যে দল পাঁচ সেশনও টিকে থাকতে পারে না, তাদের আসলে প্রশ্ন করাও বৃথা। অথচ আর মাত্র পাঁচ মিনিট টিকে থাকলেই ম্যাচটি অন্তত ড্র হতো!
প্রথম তিনদিনের বড় অংশ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর যখন বাংলাদেশ-পাকিস্তান দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটি ড্র হবে বলেই সবাই ধরে নিয়েছিলেন, সেখানে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। শেষ সেশনে পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে ২০৫ রানে অল আউট হওয়া স্বাগতিকরা হেরেছে ইনিংস ও ৭ রানে।
প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের করা ৩০০ রানের চেয়ে ২১৩ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। এর আগে ৮৭ রানে অল আউট হয় টাইগাররা। যা ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন স্কোর।
ব্যর্থ টাইগার ব্যাটাররা যেন আগের ইনিংসের পুনরাবৃত্তি করতেই যেন মাঠে নামেন। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়া টপ অর্ডারের ৪ জনের কেউই দুই অংকের ঘরে রান করতে পারেননি। সাজঘরে ফেরার আগে সাদমান ইসলাম ২, মাহমুদুল হাসান জয় ৬, নাজমুল হোসেন শান্ত ৬ ও মুমিনুল হক ৭ রান করেন।
এরপর দলের হাল ধরেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। দুজনে মিলে গড়েন ৭৩ রানের জুটি। লিটন-মুশফিকের ব্যাটে যখন ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ, তখনই ৪৫ রানে আউট হন লিটন। শতরানের আগে পাঁচ উইকেট পড়ার পর সাকিব আল হাসান ও মুশফিক মিলে দেখে শুনে খেলতে থাকেন।
ধীরে ধীরে অর্ধশতকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মুশি। কিন্তু আচমকা রান নিতে গিয়ে ৪৮ রানে ফেরেন তিনি। মূলত তখনই বোঝা যায় কি হতে চলেছে এই ম্যাচে। শেষ সেশনে অবশ্য হাতে চার উইকেট ছিল, ক্রিজে ছিলেন সাকিবও। তবে ম্যাচ ড্র করতে চাইলে দিতে হতো কঠিন মানসিকতার পরীক্ষা।
আর এই পরীক্ষাতেই ফেল সবাই। দীর্ঘক্ষণ লড়াই চালিয়ে যাওয়া মিরাজ বাবর আজমকে পেয়ে হয়তো অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিলেন। যার খেসারত দেন তার প্রথম শিকারে পরিণত হয়ে। এর আগে ৭০ বল টিকে করেন ১৪ রান।
৬৩ রানে সাকিব আউট হওয়ার পর থেকেই পরাজয়ের অপেক্ষায় ক্ষণ গুনতে থাকে বাংলাদেশ। খালেদ ফেরেন শূন্য রানেই। শেষ উইকেট জুটি হিসেবে তাইজুল ইসলাম ও এবাদত হোসেনের প্রতিরোধ টিকে ছিল ৫ ওভার।
শেষ উইকেট হিসেবে তাইকুল ইসলাম আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে মাতে পাকিস্তান। এই ইনিংসে ৪ উইকেট নেন সাজিদ খান। শাহিন আফ্রিদি ও হাসান আলি দুটি ও বাবর আজম একটি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে ৪ উইকেটে ৩০০ রান করে নিজেদের প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার করেছিল পাকিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ করেছিলেন বাবর আজম। জবাবে ৮৭ রানে গুটিয়ে গিয়ে ফলো অনে পড়ে বাংলাদেশ। সাজিদ খান শিকার করেছিলেন ৮ উইকেট।