বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ৩০ সদস্য নিহত হয়েছেন। দেশটির সাগাইং অঞ্চলে হওয়া সংঘর্ষে এই ঘটনা ঘটে। বুধবার এক প্রতিবেদেনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআই।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তাবিরোধী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের গ্রুপ পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) সদস্যদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়া জানিয়েছে, মান্দালাই শহরের ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ইরাবতী নদীর তীরে অবস্থিত সাগাইং অঞ্চলে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অভিযান শুরু করার পর প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে ৩০ জন বার্মিজ সেনা নিহত হয়েছেন।
পিডিএফের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সোমবার সকালে হওয়া এই সংঘর্ষের সময় পেল শহরের বাইরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কনভয় ল্যান্ডমাইনের কবলে পড়ে। এসময় একজন কমান্ডারসহ সরকারি বাহিনীর ৩০ সেনা নিহত হন।
তিনি আরো জানান, রোববার থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ওই কনভয়ের অপেক্ষায় ছিলাম আমরা। কারণ সরকারি বাহিনীর একজন সিনিয়র কমান্ডার (অভিযান চালাতে) এদিকে আসার কথা বলেছিলেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত ও ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে মিয়ানমারে অস্থিতিশীলতা জারি রয়েছে। এই ঘটনার পর দেশটিতে তীব্র গণ-আন্দোলন শুরু হয় এবং সামরিক ক্ষমতার জোরেই বার্মিজ সেনাবাহিনী তা দমনের চেষ্টা করে।
চলতি বছরের ১ ফেব্রয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সন সুচির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। রক্তপাতহীন এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং। অং সান সুচি ও তার দল এনএলডির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা বর্তমানে গৃহবন্দি বা কারাবন্দি অবস্থায় আছেন।
পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)-র তথ্য অনুযায়ী, সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে জান্তা সরকারের হাতে দেশটিতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১১৬৭ জন নিহত হয়েছেন এবং ৭ হাজার ২০০-র বেশি মানুষকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
এছাড়া মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সাথে বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সংঘর্ষও সাম্প্রতিক সময়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এএপিপি’র তথ্য অনুযায়ী, কেবল সেপ্টেম্বর মাসেই উভয়পক্ষের ১৩২টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।