বগুড়া কারাগার থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার কয়েদির পলায়নের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ছাদ কেটে রশির মাধ্যমে তারা পলায়ন করেন৷ পরে পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদিরা হলেন- কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা এলাকার নজরুল ইসলাম মজনু( কয়েদি নং ৯৯৮), নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার ফজরকান্দি এলাকার আমির হোসেন( কয়েদি নং- ৫১০৫), বগুড়ার কাহালু পৌরসভার মেয়র আব্দুল মান্নানের ছেলে মো: জাকারিয়া( কয়েদি নং- ৩৬৮৫) এবং বগুড়ার কুটুরবাড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার ফরিদ শেখ (কয়েদি নং- ৪২৫২)। বুধবার (২৬ জুন) বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চার আসামি ছাদ ফুটো করে বের হন। এরপর তাঁরা বিছানার চাদর ব্যবহার করে দেয়াল টপকে বাইরে চলে যান। ভোররাত ৩টা ৫৫ মিনিটে পুলিশের একাধিক টিম সংবাদ পেয়ে শহরে তল্লাশি শুরু করে। পরে ভোররাত ৪টা ১০ মিনিটে শহরের চেলোপাড়া চাষি বাজার থেকে চারজনকেই গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তিনি আরও জানান, পালিয়ে যাওয়ার পরপরই জেলা কারাগার থেকে পাঠানো ছবি দেখে গ্রেপ্তারকৃতদের শনাক্ত করা হয়। গ্রেপ্তারের পর চারজনকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয় এবং কারা কর্তৃপক্ষ তাঁদের শনাক্ত করে।
কারাগার পরিদর্শন করে দেখা গেছে, তাঁরা চারজন একই সঙ্গে একটি কক্ষে অবস্থান করতেন। তাঁরা পরিকল্পিতভাবে ছাদ ফুটো করে পরিধেয় বস্ত্র ও বিছানার চাদর জোড়া দিয়ে রশি বানিয়ে দেয়াল টপকে পালিয়ে করতোয়া নদীর পার হয়ে পালিয়ে যান। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। এদিকে এই ঘটনায় ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, কমিটির প্রধান করা হয়েছে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে। কমিটিতে জেলা পুলিশ, গণপূর্ত অধিদফতর ও জেলা কারা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কি না এবং নিরাপত্তাব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। এই ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে কারাগারের নিরাপত্তা নিয়েও।