কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীর ১০ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরে অভিযান চালিয়ে মিয়ানমার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবহৃত জি-৩ রাইফেল ও ৫ রাউন্ড তাজা গুলিসহ আরসার গান গ্রুপ কমান্ডার মো. জাকারিয়াকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাতে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এ অভিযান চালায়। জাকারিয়া ওই শিবিরের মৃত আলী জোহরের ছেলে। কক্সবাজার র্যাব-১৫ ব্যাটালিয়ানের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব গোয়েন্দা সূত্রে তথ্য পায়, বালুখালীর ১০ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার কতিপয় সদস্য নাশকতার জন্য মিয়ানমার থেকে অস্ত্র নিয়ে শিবিরে অবস্থান করছে। এমন খবরে রাতে ওই শিবিরে অভিযান চালানো হয়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পলানোর সময় আরসা সন্ত্রাসী জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এক পর্যায়ে তার স্বীকারোক্তি মতে পালংখালী ইউনিয়নের ঘাঁটি বিল থেকে জি-৩ রাইফেল ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। র্যাব জানায়, জাকারিয়া ২০১৭ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে সপরিবারে ওই শিবিরে বসবাস শুরু করেন। শুরুর দিকে তিনি আরসার নেট দল অর্থাৎ সংবাদদাতা এবং পরে গান গ্রুপের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করেন। এরপর ২০২৩ সালের শেষের দিকে ১০ নম্বর শিবিরের ব্লক-এফ/১৭ এর ব্লক কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পান। তার নেতৃত্বে আরসার অন্যান্য সদস্যরা শিবিরে অপহরণ, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ করতেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে এবং দুবার কারাভোগও করেছেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন। প্রসঙ্গত, র্যাব বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসছে। অভিযানের মাধ্যমে এ পর্যন্ত আরসার সামরিক কমান্ডার হাফেজ নূর মোহাম্মদ, অর্থ সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুস, গান কমান্ডার রহিমুল্লাহ প্রকাশ মুছা, অর্থ সমন্বয়ক মোহাম্মদ এরশাদ প্রকাশ নোমান চৌধুরী ও আবু তৈয়ব, কিলার গ্রুপের প্রধান নূর কামাল প্রকাশ সমিউদ্দিন, ইন্টেলিজেন্স সেলের কমান্ডার ওসমান গণি র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়। এছাড়া লজিস্টিক শাখার প্রধান, গান গ্রুপের প্রধান, প্রধান সমন্বয়ক, অর্থ শাখার প্রধান, আরসা প্রধান নেতা আতাউল্লাহর দেহরক্ষী আকিজ ও মৌলভী অলি আকিজসহ ১১৭ জন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫৩.৭১ কেজি বিস্ফোরক, ৫টি গ্রেনেড, ৩টি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশীয় তরি হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৪টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৬টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১৭৮ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ, ৬৭ রাউন্ড খালি খোসা ও ৪৮টি ককটেল উদ্ধার করা হয়।