![Daily Nabochatona](https://dailynabochatona.com/wp-content/uploads/2023/01/31BwAd3.png)
আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়জাদুঘর গতকাল ১৮ মে ২০২৪, শনিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালারআয়োজন করে। প্রথম পর্বে, জাদুঘর প্রাঙ্গণে বেলুন উড়ানোর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশহিসেবে গতকাল জাদুঘরে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর উদ্বোধন করা হয়।উল্লেখ্য ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর প্রদর্শনী কার্যক্রম দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বর্তমান মহাপরিচালকের কর্মতৎপরতায় ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর বাসটি পুনরায় চালু হয়েছে। বাসটি জাদুঘরের বেশকিছু উল্লেখযোগ্য নিদর্শন দিয়ে সাজানো হয়েছে। যা দেশের প্রান্তিকজনগোষ্ঠী, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনের জন্য জেলা/উপজেলায়প্রেরণ করা হবে। দ্বিতীয় পর্বে, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও আইকমবাংলাদেশ জাতীয় কমিটির যৌথ উদ্যোগে ‘শিক্ষা ও গবেষণায় জাদুঘর’শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানঅতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব জনাব মোঃ আবুল মনসুর।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃইমরুল চৌধুরী। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আহসান মঞ্জিল জাদুঘরেরউপ-কীপার ও আইকম বাংলাদেশ জাতীয় কমিটির সেক্রেটারি জনাবমো. সেরাজুল ইসলাম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেনজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপকমালিহা নার্গিস আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন মহাপরিচালক জনাব মোঃকামরুজ্জামান। জনাব মো. সেরাজুল ইসলাম তাঁর প্রবন্ধে উল্লেখ করেনবলেন, ‘শিক্ষা ও গবেষণায় জাদুঘর’ শব্দগুচ্ছের অর্থ দাঁড়ায় জাদুঘর-সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান জ্ঞানকে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখাএবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান শেখানো ও শিক্ষণ-এর মাধ্যমে কীভাবে জ্ঞানকেপ্রসারিত ও আত্মীকৃত হচ্ছে তা উপলব্ধির চেষ্টা করা। শিক্ষা ও গবেষণাএকবিন্দুতে মিলিত না-হলে বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন টেকসই হবে না। তাই,শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বারোপ এ বছর জাদুঘর দিবসের আহ্বান।জাদুঘরের শিক্ষা জীবনব্যাপী শিক্ষার সমরূপ। জাদুঘরের সাফল্যপরিমাপের ক্ষেত্রে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম ও তার পরিবীক্ষণ অত্যন্তগুরুত্বপূর্ণ দু’টি সূচক। এছাড়াও তিনি বলেন, গবেষণার মাধ্যমে সৃজিতজ্ঞান শিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের বোধগম্য ভাষায়পৌঁছানোই জাদুঘরের মূল লক্ষ্য। আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপকমালিহা নার্গিস আহমেদ বলেন, শিক্ষার গুরুত্ব সবসময়ই ছিলো। জাদুঘরের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, শিক্ষা ও গবেষণার জন্যই জাদুঘের নিদর্শন সংগ্রহ করা হতো। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে আর্ট হিস্টোরি এন্ড মিউজিওলজী সার্টিফিকেট কোর্সটি চালু করা জাদুঘরেরসময় উপযোগী সিদ্ধান্ত। এছাড়াও তিনি কালচারাল এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম চালু করার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের আনুরোধ করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জনাব মোঃ ইমরুল চৌধুরী বলেন, জাদুঘর হলো একটি দেশের ঐতিহ্যের সংগ্রহশালা বা ভাণ্ডার। মূলত জাদুঘর থেকে ইতিহাস, ধর্ম, ঐতিহ্যের ধারনা পাওয়া যায়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব মোঃআবুল মনসুর বলেন, শিক্ষা ও গবেষণায় জাদুঘর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষার কোন বয়স নেই। জাদুঘর পরিদর্শনের মাধ্যমে যেকোন বয়সের মানুষ শিক্ষা অর্জন করতে পারে। আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ বেশি-বেশি জাদুঘর পরিদর্শন করা এবং অন্যকে উৎসাহিত করা। বিশেষ করে আমাদের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা ওগবেষণার যায়গা জাদুঘর। সভাপতির বক্তব্যে জনাব মোঃকামরুজ্জামান বলেন, জাদুঘরকে বলা হয় জনগণের বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ দর্শনার্থীগণ সরাসরি জাদুঘর পরিদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষা বা জ্ঞান লাভ করেন। দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিকট তুলে ধরার মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর দেশের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে নিরন্তর। সেমিনার ও আলোচনা সভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানআয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেনশিল্পী সুজিত মোস্তফা ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর শিল্পীগোষ্ঠী।