![Daily Nabochatona](https://dailynabochatona.com/wp-content/uploads/2023/01/31BwAd3.png)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উইলসন্স রোগীদের জেনেটিক পরিবর্তন ও এর স্নায়ু উপসর্গ নিয়ে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। মূলত জেনেটিক ডিসঅর্ডারে কারণে শরীরে অতিরিক্ত কপার জমা হয়ে মস্তিস্ক এবং লিভারের ক্ষতিগ্রস্তকারী রোগ উইলসন ডিজিজ নিয়ে বিশদ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। দেশে উইলসন ডিজিজের নতুন ২টি মিউটেশন শনাক্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিউরোলজি বিভাগ এবং এনাটমি বিভাগের যৌথ গবেষণায় নতুন ধরণের বিষয়টি উঠে এসেছে। এমনকি এই রোগের চিকিৎসা টার্গেট জিন থেরাপির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েই হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক । বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মনিরুজ্জামান খান, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, বেসিক সাইন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আহমেদ আবু সালেহ্। নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া এর সভাপতিত্বে প্রধান গবেষক হিসেবে ফলাফল উপস্থাপন করেন এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু ও নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আহসান হাবিব হেলাল। গতকাল মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ইং তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে এই বিষয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জানানো হয়, উইলসন ডিজিজ একটি জেনেটিক ডিসঅর্ডার যাতে শরীরে অতিরিক্ত কপার জমা হয়। লক্ষণগুলি সাধারণত মস্তিস্ক এবং লিভারের সাথে সম্পর্কিত। লিভার সম্পর্কিত উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে বমি, দুর্বলতা, পেটে তরল জমা হওয়া, পা ফুলে যাওয়া, ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া এবং চুলকানি। মস্তিস্ক সম্পর্কিত লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে কম্পন, পেশী শক্ত হওয়া, কথা বরতে সমস্যা, ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন, উদ্বেগ এবং মনোবিকার ইত্যাদি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক বলেন, আন্তর্জাতিকমানের গবেষণার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় ফান্ড নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে। মানবদেহের জন্য কপারের যেমন গুরুত্ব রয়েছে আবার অতিরিক্ত কপার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। উইলসন্স ডিজিজের মতো রোগ ও সমস্যা জেনেটিক পরিবর্তনজনিত হওয়ায় এই রোগ এড়াতে রক্তের সম্পর্কের নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বিবাহ না করাই উত্তম। মাননীয় উপাচার্য বলেন, কিছুদিন আগেই আমি উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েছি। এটাকে আমি পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করেছি। আমি গবেষণা, শিক্ষা নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। ইতিমধ্যে একাধিকবার চিকিৎসক- গবেষকদের নিয়ে মিটিং করেছি। তাদেরকে গবেষণা কাজে মনোনিবেশ করতে বলেছি। উইলসন ডিজিজটি মূলত উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত। এটি নির্দিষ্ট জিনের পরিবর্তনের ফলে ঘটে যা একটি প্রোটিন তৈরী করার মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত তামা অপসারন করে। এর ফলে শরীরে বিশেষত মস্তিস্ক, যকৃত এবং চোখে তামা জমা হয়। অতিরিক্ত তামা দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতিই উইলসন ডিজিজের উপসর্গগুলো তৈরী করে। পরিবারের একজনের মধ্যে যদি রোগটি শনাক্ত করা যায়, তখন অন্যান্য সদস্যদেরও পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্তের মাধ্যমে রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব। এ রোগটি অবশ্যই পিতামাতা থেকে আসতে হবে। শুধু একজন থেকে আসলেই হবে না, মায়ের থেকেও আসতে হবে এমনকি বাবার থেকেও আসতে হবে। দুই জিন একত্র হলেই সন্তানের উইলসন ডিজিজ হয়। এজন্য আমাদেরকে অবশ্যই খালাতো, মামাতো এবং ফুফাতো বোনের সঙ্গে বিয়ে বন্ধ করতে হবে। তাহলেই এই রোগে আক্রান্ত কমে আসবে।