খুলনার কয়রায় সার্ভেয়ার পিটানো সেই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এবার এক নারী ইউপি সদস্যকে ইউনিয়ন পরিষদের কক্ষে আটকে রেখে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোববার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কয়রা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনি।
অভিযুক্ত সেই চেয়ারম্যানের নাম জিয়াউর রহমান জুয়েল। তিনি উপজেলার আমাদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর ভুক্তভোগী নারীর নাম দিলরুবা খাতুন। তিনি আমাদী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
দিলরুবা খাতুনের অভিযোগ, শনিবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার পর প্রথমে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েলের লোকজন তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান তাকে তার কক্ষে ডাকেন। সেই সময় সেখানে পরিষদের আরও কয়েকজন সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে ইউপি চেয়ারম্যান চেয়ার থেকে উঠে প্রথমে কক্ষের দরজা বন্ধ করেন। এরপর কোনো কারণ ছাড়াই তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে তাকে মারতে উদ্যত হলে উপস্থিত কয়েকজন তাকে নিবৃত্ত করেন। এ সময় তিনি ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে প্রাণে মেরে ফেলারও’ হুমকি দেন।
ঘটনার সময় উপস্হিত থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য বলেন, রানা ও মুন্নার সাথে দিলরুবার আগে কি হয়েছে জানি না (রানা ও মুন্না চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানের সহোদর ভাই)। ওই দিন প্রথমে রানা ও মুন্না দিলরুবার সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেন। পরে চেয়ারম্যান এসে পরিষদের কলাপসিবল গেট বন্ধের নির্দেশ দেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারতে যান। পরে সালাম সানা নামের এক ব্যক্তি দিলরুবাকে চেয়ারম্যানের হাত থেকে রক্ষা করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল বলেন, একটি প্রকল্পের কাজে অনিয়ম হয়েছে, এমন অভিযোগের বিষয়ে তার (ইউপি সদস্য) কাছে জানতে চাওয়া নিয়ে একটু-আধটু কথা কাটাকাটি হয়েছে। এর বেশি কিছু না।
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের খুলনার উপ-পরিচালক মো. ইউসুপ আলী বলেন, আমদী ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্যকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় কয়রা থানায় অভিযোগ করার কথা শুনেছি। অভিযোগের কপি পেলে জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ৬ এপ্রিল কয়রায় একটি খালের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আক্তারুজ্জানকে মারধর করেন ওই ইউপি চেয়ারম্যানের জিয়াউর রহমান জুয়েল। সেই সময় ভুক্তভোগী সার্ভেয়ার আক্তারুজ্জান এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।