রংপুরে নাজমুল হুদা নামের এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ, তদবির, বদলি অবৈধ অর্থ বানিজ্য ও নারী কেলেংকারিসহ নানান অপকর্মের ফিরিস্তি পুলিশ মহা পরিদর্শক আইজিপি বরাবর ভূক্তভূগি মানুষের অভিযোগ।আইজিপি বরাবরে প্রদানকৃত দরখাস্ত সুত্রে জানাগেছে, রংপুর পীরগঞ্জ থানায় কর্মরত কনষ্টবল (কংনং৭৬৯) নাজমুল হুদা।তার বাড়ি লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ির সাজেকনগর গ্রামে। একই এলাকার বাসিন্দা তৎকালীন ডিআইজি সোহরাব হোসেনেরও।বিএনপি জামাত সরকারের আমলে বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু’র সুপারিশে এবং ডিআইজি সোহরাবের হস্তক্ষেপে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে নাজমুল।চাকুরীতে যোগদানের কিছুদিন পরে নিজ এলাকার ১০/১২জনকে চাকুরি পাইয়ে দেয়ার প্রলোভনে বেশকিছু টাকা হাতিয়ে আত্নস্বাত করে।নারী পুলিশকে নির্যাতন, ধর্ষন, মাদক পাচার, পোষ্টিং বানিজ্য, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বানিজ্য, অবৈধ ভয়ভীতি দেখানো, নিম্ন-উর্দ্ধ পদস্থ কর্মকর্তাদের বেনামে পিটিশন, ম্যাসেজ করে বিভ্রান্তির মাধ্যমে অবৈধ বানিজ্য করে বিপুল অর্থ সম্পদ অর্জন করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যায় কং নাজমুল। ফলে তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দেয় যে, বালের (পুলিশের) চাকুরি আর করবোনা।সয়াবিন তেলের ব্যবসা করবো।অথচ চাকুরির শুরুর দিকে কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ লাইনে থাকাবস্থায় তার বিরুদ্ধে ব্যারাকের ফোর্সদের লুঙ্গি, বিছানার চাদর, শার্ট, ঘড়ি, টাকা পয়সা চুরির অভিযোগে বদলি হয় রংপুর জেলায়।রংপুর জেলা ডিএসবিতে যোগদান করে পুলিশ সুপারের ক্যামেরা পার্সন বনেন।এসপি’র ক্যামেরাপার্সন দাপটে কনষ্টবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় পাশের স্লীপ বিক্রয় বানিজ্যে মাতেন।নতুন এসপি যোগদান করলে পূর্বের ন্যায় ক্যামেরাপার্সন হিসেবে থেকে যায় নাজমুল। এ সুযোগে বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়িসহ পুলিশের বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে মাসোহারা তুলে, ঠিকাদার, পুলিশ লাইনের এমটিসি স্টোর, ডিকে ক্যান্টিন, রেশন স্টোর থেকে নানা অপকৌশলে চাঁদা আদায় করে আসে।কং নাজমুলের কন্যার রাজকীয় আকিকা অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ অসংখ্য বিভিন্ন পদস্থ অফিসারবৃন্দে উপস্থিত হন। মহা ধুমধামে এক আকিকা অনুষ্ঠানে ১০লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়। জেলার বিশেষ শাখার নারী কনষ্টবলের সাথে পরকীয়ায় মাতে।এ ঘটনা জনৈক পুলিশ দেখে ফেল্লে পা ধরে ক্ষমা চান আরবিষয়টি গোপন রাখার অনুরোধ করে।নারী কনষ্টলবলের স্বামী ঘটনা জানতে পেরে নাজমুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।একদা নাজমুলের স্ত্রী ও নারী কনষ্ঠবলের মধ্যে জেলা স্কুলের সামনে হাতাহাতি হলে নাজমুলের স্ত্রী পুলিশ সুপার কে বিচার দেয়। কং নাজমুল কেবল একজন নারী পুলিশের সাথে কুসম্পর্ক রাখে নাই। তৎকালীন ডিআই ওয়ান ওসি শরিফুল ইসলাম তার নানাধরনের বিশৃংখলার বিষয় ধরে ফেলে এবং উর্দ্ধতন অফিসারকে অবগতি করতে চাইলে তাকেও চরম বেয়াদিবর সাথে হুমকি দেয়।নাজমুলের পোষ্টিং বানিজ্য: পদায়নের প্রলোভনে ইন্সপেক্টর রবিউল থেকে ১লাখ,ট্রাফিকের সালেক থেকে ৬০ হাজার, কনষ্টবল কামরুল(আরআরএফ) থেকে ৪০হাজার,কনষ্টবল খোরশেদ থেকে ৪০হাজার, নারী কনষ্টবল হাসিয়ারা থেকে ১লাখ ৬০হাজার,সার্জেন্ট নিকুঞ্জ থেকে ১লাখ, একটি অডিও ফাঁস করার ভয় দেখিয়ে বদরগঞ্জ ওসি হাওলাদার থেকে ৫লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। বর্তমানে কং নাজমুলের ২টা দামি মাইক্রোবাসে লেখা পুলিশ চলাচল করে। মাদক ও চোরাচালান কাজে ব্যবহৃত হয়। তথ্য আছে যে, রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ওহাব নামের এক কর্মচারির থেকে চাকুরির প্রলোভনে ৪লাখ টাকা নেয়ার পর চাকুরি দিতে না পারায় ২লাখ ফেরত দিলেও বাকি ২লাখ টাকা দিতে গড়িমসি করে। পরে রংপুর পুলিশ সুপারকে গত ৫/৫/২১ইং তারিখে লিখিত অভিযোগ করলে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে সেই ২লাখ টাকাও ফেরত পায়। এ ছাড়া রবিউল নামের এক ব্যক্তিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে চাকুরি দেয়ার নামেও ৮লাখ টাকা গ্রহন করে চাকুরি দিতে না পারলে এবং টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করলে রবিউল নাজমুলকে বেধে রেখে সমাধান করে।এধরনের অসংখ্য অনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত থাকা নাজমুলের নিশ্চিত অবৈধ খুঁটি আছে বলেই অভিযোগদাতা আব্দুল মান্নান ও আব্দুল ওহাবসহ অনেকেই মনে করেন।কারন, এতকিছু ঘটনার ব্যাপারে অভিযোগ হলেও কং নাজমুলের অবৈধ কর্মকান্ড থামছেই না।পাল্টা অভিযোগ কারিরাই নানাভাবে নাজেহালের শিকার হন। অভিযুক্ত কং নাজমুল হুদা তার বিরুদ্ধের অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, এসব মিথ্যা, বনোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত।এডিশনাল এসপি রাজিয়া জানান, বর্তমানে আমি ট্রেনিং এ আছি, বিষয়টির তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে প্রমান সাপেক্ষে ব্যবস্থা।জেলা বিশেষ শাখার ডিআই ওয়ান ওসি রবিউল বলেন, কং ৭৬৯ নাজমুলের বিরুদ্ধের অভিযোগ সিনিয়র স্যাররা তদন্ত করছেন বলে জানান।