ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বলেছেন, পানির দাম ন্যূনতম ২০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে ঢাকা ওয়াসা। যদি সরকার এর চেয়েও বেশি বাড়াতে চায় সেক্ষেত্রে ওয়াসার কোনো আপত্তি নেই। বর্তমানে আবাসিক ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার লিটার পানি মানুষকে ১৫ টাকা ১৮ পয়সায় কিনতে হচ্ছে। তবে এটার উৎপাদন খরচ প্রায় ২৫ টাকা। বর্তমানে ভর্তুকি দিয়ে পানি বিক্রি করছি।
বুধবার রাজধানীর ওয়াসা ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
পানির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব বিষয়ে সার্বিক তথ্য জানাতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তাকসিম এ খান।
ঢাকা ওয়াসার এমডি বলেন, আমাদের বোর্ড সভায় আমরা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পানির দাম বাড়াতে পারি। আমরা চাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে। তাই উৎপাদন খরচের সঙ্গে সমন্বয় করতে আমরা সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ থেকে শুরু করে আরো বেশি শতাংশ পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি। এতে করে সরকারের ভর্তুকি কমে আসবে। সরকার কত শতাংশ পানির দাম বাড়াবে, আর কত ভর্তুকি দেবে সেটা সরকারের বিষয়। সরকার যা নির্ধারণ করবে আমরা সেই অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করব। তবে বর্তমানে মানুষকে ১৫ টাকা ১৮ পয়সায় যে পানি বিক্রি হচ্ছে তার উৎপাদন খরচ প্রায় ২৫ টাকা। মূলত ভর্তুকি কমাতেই পানির মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে, গত সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ওয়াসার বোর্ড সভায় পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে ঢাকা ওয়াসা। এর আগে গত দুই বছরে দুবার আবাসিক ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে পানির দাম বাড়িয়েছিল ঢাকা ওয়াসা। এবারও আরেক দফায় পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু বোর্ড সভায় ১৩ সদস্যদের বেশিরভাগই করোনাকালীন পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। ২০০৯ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৪ বার ওয়াসার পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে আবাসিক ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার লিটার দাম পড়ছে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। ওয়াসার বোর্ড সভায় এটাকে বাড়িয়ে ২১ টাকা ২৫ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া সভায় বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার লিটার পানির বর্তমান দাম ৪২ টাকা চলছে, এটার দাম বাড়িয়ে ৫৮ দশমিক ৮ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর জন্য এটি কেবল প্রস্তাব করা হয়েছে সর্বশেষ বোর্ড সভায়। যদিও সেখানে বোর্ড সদস্যদের বেশিরভাগই এই মুহূর্তে পানির দাম না বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। পরবর্তীতে দাম বাড়ানোর এই প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। যদি সেখান থেকে এ বিষয়ে অনুমোদন হয় তাহলে পানির দাম বাড়বে। আর পানির নতুন দাম কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই থেকে।
সর্বশেষ গত বছর ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর পর আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। এর আগে এক হাজার লিটার পানির দাম পড়ত ১৪ টাকা ৪৬ পয়সা। অন্যদিকে বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম পড়ছে ৪২ টাকা। এর আগে সেটা দিতে হতো ৪০ টাকা।