মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ অনুষ্ঠান উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের মানুষকে শপথ পড়াবেন।
সোমবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে যৌথসভায় এ কথা বলেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বিঘ্ন করে দেশের মধ্যে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এ জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। আজকে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সুসংগঠিত একটি দল। এ দলকে আরো স্মার্ট, অত্যাধুনিক সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খল করতে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। ঢাকা সিটিতে আওয়ামী লীগ বেশ তৎপর, সুসংগঠিত। বিভিন্ন ইউনিট সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের আরো সুসংগঠিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী জীবনে একবারই আসে। তাই এ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ। এটা আমাদের সবাইকে অনুধাবন করতে হবে। এ দিন উপলক্ষে আমরা যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছি, তা ঢাকা সিটিতে মুজিববর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠানে সুশৃঙ্খলভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মুজিববর্ষকে আমরা নতুনভাবে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালন করতে চাই। এজন্য ঢাকা সিটিতে বিভিন্ন সাজসজ্জা করা হবে, প্রতিটা এলাকায়, পাড়ায় পাড়ায়, গলিতে গলিতেও সাজসজ্জা করা হবে। মনে রাখতে হবে- আমাদের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ স্মৃতি, আবেগের স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্মৃতি, স্বাধীনতা ও বিজয়ের ৫০ বছরের স্মৃতি উদযাপন করব। সকলের সম্মতি নিয়ে অনুষ্ঠানসূচি সাজানো হবে। ঢাকা শহরসহ সারাদেশে আলোকসজ্জা করা হবে। এদিন উপলক্ষে অনেকেই ব্যানার-ফেস্টুন করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু, আমাদের নেত্রী ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের চেয়ে কারো কারো ছবি বড় দেখা যায়, এটা করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি দেওয়ার পর কোনো ব্যক্তি বিশেষের ছবি দেওয়া যাবে না; তবে সৌজন্যে নাম দেওয়া যাবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ সমাপনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে পাড়ায় পাড়ায় আলোকসজ্জা করা হবে; তবে এককভাবে করা যাবে না। কর্মসূচির বিষয়বস্তুগুলো দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র-কাউন্সিলদের জানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া আমরা যে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছি তাও জানিয়ে দেওয়া হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল চারটায় সারাদেশের মানুষকে শপথ পড়াবেন। এছাড়া সকালে শহিদদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও বঙ্গবন্ধু প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। মুজিববর্ষ বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে ১৭ তারিখে জাতীয় সংসদ প্রাঙ্গণে বিশাল অনুষ্ঠান করা হবে। সেই অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি অতিথি হিসেবে আসবেন, এছাড়া ভুটানের রাজাও আসবেন এবং অনুষ্ঠানে তারা বক্তব্য রাখবেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৮ তারিখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখাচিরন্তন থেকে র্যালি বের হয়ে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু প্রাঙ্গণে সামনে গিয়ে বিজয় শোভাযাত্রা শেষ হবে।
বিজয় শোভাযাত্রায় বিভিন্ন বেনার ফেস্টুন ও সাজসজ্জা থাকবে কিন্তু মানুষের ভোগান্তি যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করার জন্য সকলকে যথাসময়ে আসতে হবে। আপনারা চাইলে মাসব্যাপী যার যার এলাকায় প্রোগ্রামও রাখতে পারেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ মহানগরের নেতারা।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, উত্তর সিটি কর্পোরেশন মেয়র আতিকুল ইসলামসহ কাউন্সিলরা।