৪ পেরিয়ে ৫ বছরে পা রাখলো দৈনিক দেশের কণ্ঠ। বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশের কণ্ঠের কার্যালয়ে দেশের কণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক মো. আলমগীর হোসেনের সাথে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতি থেকে কেক কাটেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চেীধুরী।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আজকালের খবরের সম্পাদক ফারুক আহমেদ তালুকদার, দৈনিক নবচেতনার সম্পাদক ও প্রকাশক লায়ন মো. সাখাওয়াত হোসেন, দৈনিক বাংলাদেশের আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মফিজুর রহমান খান বাবু, দৈনিক অগ্রসরের সম্পাদক ও প্রকাশক মোস্তফা হোসেন চৌধুরী, দৈনিক বাংলার ডাকের সম্পাদক মো. মনোয়ার হোসেন সিদ্দিকী এবং দেশের কণ্ঠ পরিবারের সদস্যরা।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী এ সময় বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে দেশের কণ্ঠ ইতিমধ্যে পাঠক সমাজে সাড়া ফেলেছে এবং অর্জন করেছে জনপ্রিয়তা। তিনি দেশের কণ্ঠের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে দেশের কণ্ঠ পরিবারের পক্ষ থেকে সকলকে অভিবাদন জানিয়ে সম্পাদক ও প্রকাশক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ৪ বছর পেরিয়ে ৫ বছরে পা দিচ্ছে দেশের কণ্ঠ। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আবারো বেড়ে যাওয়ায় ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জমকালো অনুষ্ঠান আয়োজন করা থেকে বিরত থেকেছি। অত্যন্ত ছোট পরিসরে আজকের এ আয়োজন। তবে সারাদেশের জেলা, উপজেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকদের অনুষ্ঠান উদযাপনের অনুরোধকে উপেক্ষা করতে পারিনি। তাই তাদেরকেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছোট্ট পরিসরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপনের অনুমতি দেয়ায় তারাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছোট্ট পরিসরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপন করেছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জমকালো আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও মূল পত্রিকার বাইরে অতিরিক্ত ৮ পৃষ্ঠার একটা বিশেষ পাতা বের করেছি। আমাদের এ বিশেষ আয়োজনে লিখিতভাবে বাণী না দিলেও নিজ নিজ প্রেস সচিবের মাধ্যমে শুভ কামনা জানিয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ ছাড়া লিখিতভাবে শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী, স¦রাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী, সংস্কৃতি-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীসহ দেশের বিশিষ্ট গুণীজন ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বগণ। সকলের শুভেচ্ছায় আমরা সিক্ত হয়েছি। এ ছাড়া পিআইবির মহাপরিচালক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ ও বিশিষ্ট সাংবাদিক কবি নাসির আহমেদের লেখা আমাদের এ আয়োজনকে আরও সমৃদ্ধ করেছে বলে আমার বিশ্বাস।
দেশের কণ্ঠের আজ ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হলেও পাঠকের কাছে এ পত্রিকাটির বয়স আড়াই বছরের মতো। এর কারণ ২০১৭ সালের ৮ মে ডিক্লারেশন পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ১২ জুন স্বল্পপরিসরে দেশের কণ্ঠের প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়। এরপর ২০১৮ সালের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত থাকে স্বল্পপরিসরে। সে সময় পত্রিকা পাঠকের কাছে পৌঁছতো না, অর্থাৎ আমরা পত্রিকাটি বাজারে দেইনি। প্রায় দেড় বছর নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পাঠকের চাহিদা বিবেচনা করে ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ‘সব পাঠকের কাগজ’ স্লোগান ধারণ করে দেশের অনেক পত্রিকার ভিড়ে ‘দৈনিক দেশের কণ্ঠ’ নামে আরো একটি নতুন পত্রিকা বাজারে আসে। ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর বাজারে আসলেও নিয়মানুয়ী ২০১৭ সালের ১১ জুনের প্রথম সংখ্যা অনুযায়ী আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করি ১১ জুন।
এখন ‘দৈনিক দেশের কণ্ঠ’ প্রিন্ট, অনলাইন ও ই-পেপারÑএই ৩ ভার্সনে প্রকাশিত হয়। ‘দেশের কণ্ঠ’ এখন অনেক বিস্তৃত। কিন্তু শুরুর গল্পটা এমন সহজ ছিলো না। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশে চরম রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছিলো। তখন এই পত্রিকা প্রকাশনার ক্ষেত্রে আমাকে অনেকেই অনেকভাবে নিরুৎসাহিত করেছিলেন এই বলে যে, দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে নতুন পত্রিকার আত্মপ্রকাশ করা আদৌ ঠিক হবে কিনা। কিন্তু পত্রিকা প্রকাশের সিদ্ধান্তে আমি অটল ছিলাম এবং বিভিন্ন জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করে দেশের ওই রকম রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যেও পত্রিকা প্রকাশ করি। এখন ভাবি সেটা ছিলো আমার এক ধরনের দুঃসাহসিকতা।
হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৫ বছরে পা দিচ্ছে দেশের কণ্ঠ। এরই মধ্যে পাঠকের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে পত্রিকাটি। ব্যাপক জনপ্রিয় না হলেও পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে ‘দেশের কণ্ঠ’-এ আমার আত্মবিশ্বাস। একমাত্র পাঠকের ভালোবাসায়, বিজ্ঞাপনদাতাদের সহযোগিতায়, হকার ও এজেন্টদের আন্তরিকতায় কোনো বড় গ্রুপের অর্থলগ্নি ছাড়াই পথ চলছে ‘দেশের কণ্ঠ’। এ আমাদের এক অন্যরকম শক্তি। এ কারণেই ‘দেশের কণ্ঠ’ কারো মুখাপেক্ষী নয়। ‘দেশের কণ্ঠ’ এমন একটি জাতীয় দৈনিক যেটা দেশের কথা বলবে, দেশের মানুষের কথা বলবে। এ দেশের আপামর মানুষের কণ্ঠই প্রতিধ্বনিত হবে ‘দেশের কণ্ঠ’ পত্রিকায়। এ জায়গা থেকে আমরা একটুও সরে আসিনি, একচুল পরিমাণও ছাড় দেইনি। ‘দেশের কণ্ঠ’ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে দেশের মানুষের কাছেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কোনো দল বা গোষ্ঠীর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়, দায়বদ্ধও নয়। তাই ‘দেশের কণ্ঠ’ সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে দ্বিধা করে না। এর ব্যত্যয় ঘটবে না কখনো।