করোনা পরিস্থিতির কারণে একাধিক ধাপে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এজন্য পর্যাপ্ত প্রশ্ন সেট প্রণয়ন করা হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রেও নানা পরিবর্তন আনা হবে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লিখিত পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিপিই থেকে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আবেদন কার্যক্রম ছয় মাস আগে শেষ হলেও নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করা হয়নি। করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করতে সকল প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ণে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজ শেষ করা হয়েছে। পরীক্ষার বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সঙ্গে চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষা আয়োজনে নিয়োগ পরিচালনা কমিটি একাধিক সভা করে সব প্রস্তুতিমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন কেবল পরীক্ষা শুরুর অপেক্ষা করা হচ্ছে।
তারা জানান, এবার নিয়োগ পরীক্ষায় বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। নিজ বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা কেন্দ্র সচিব হতে পারবে না। লিখিত পরীক্ষার দিন লটারি করে কেন্দ্র সচিব নির্বাচন করা হবে। এতে করে কেউ কোনো ধরনের অনিয়ম করতে পারবে না। লিখিত পরীক্ষায় পাশ করা প্রার্থীদের ভাইভা বোর্ডে পরিচয় নিশ্চিত করতে প্রবেশের আগে তার জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধাপে ধাপে নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করা হবে।
এ বিষয়ে ডিপিইর মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘পরীক্ষা আয়োজনে কারিগরি প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় লিখিত পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমানে পরীক্ষা কেন্দ্র নির্বাচন করার কাজ শুরু হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে ঝুঁকি এড়াতে ধাপে ধাপে এ পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। কোন কোন কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে, কীভাবে আয়োজন করা হবে সেসব বিষয় নিয়ে নিয়োগ কমিটি কাজ করছে। সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে লিখিত পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এবার শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এজন্য বুয়েটের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি সাক্ষর হয়েছে। নিরাপত্তা, সঠিক প্রার্থী নিশ্চিতকরণ, লটারির মাধ্যমে কেন্দ্র সচিব নির্ধারণ করা হবে। করোনা পরিস্থিতিতে ১৩ লক্ষাধিক প্রার্থীর একসঙ্গে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না বলে ধাপে ধাপে পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সেজন্য ১৬ সেট প্রশ্নপত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সারাদেশে ২৫ হাজার ৬৩০ জন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক এবং ৬ হাজার ৯৪৭টি শূন্যপদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে গত বছরের ২৫ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের অনলাইনে আবেদন শুরু হয়ে ২৪ নভেম্বর শেষ হয়। এরপর দুই ধাপে ভুল সংশোধন করার সুযোগ দেয় ডিপিই। এতে মোট ১৩ লাখ ৫ হাজার প্রার্থী আবেদন করেন।