রাজধানী ঢাকা ষাটের দশকের পর থেকে অপরিকল্পিতভাবে বাড়তে শুরু করে। যথাযথ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র ইমারত ভরে ওঠে নগরী। বর্তমানে রাজধানীতে পাকা ভবন প্রায় ১২ লাখ। এর ৭০ শতাংশই রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে।
সম্প্রতি রাজধানীর ভবনগুলোর ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিয়ে করা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। সাড়ে তিন হাজার স্কুল, কলেজ ও হাসপাতাল ভবনের ওপর জরিপ চালিয়ে ৭০ শতাংশেই ভূমিকম্পের ঝুঁকি পেয়েছে সংস্থাটি।
এ পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে মজবুত করতে হবে। এছাড়া ভূমিকম্পের ঝুঁকি কমাতে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড মানতে বাধ্য করতে পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন তারা।
জানতে চাইলে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, রাজধানীতে বিল্ডিং কোড মানার প্রবণতা কম দেখা গেছে ৬ তলা পর্যন্ত ভবনগুলোতে। এসব ভবন কাঠামোগতভাবে বেশ দুর্বল। তাই এগুলো ভূমিকম্পে ঝুঁকির মুখে পড়বে।
এ বিষয়ে রাজউকের আরবান রেজিলেন্স প্রজেক্টের পরিচালক আবদুল লতিফ জানান, গত এক দশকে ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিয়ে কিছুটা সচেতনতা তৈরি হলেও তা দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট নয়। অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে কঠিন হবে উদ্ধার তৎপরতা। সরঞ্জামের পাশাপাশি জনবলও পর্যাপ্ত নয়।
রাজউক জানিয়েছে, সংস্থাটির ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে ভূমিকম্পের ঝুঁকি নির্ণয়ে ভবনের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার মাটি পরীক্ষা করে সেই তথ্য যোগ করা হচ্ছে।
এর আগে, টানা ছয় দফা মৃদু ভূমিকম্পে সিলেট শহরসহ আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেশের অন্য বড় শহরগুলো নিয়ে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে দেশের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের। বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, টানা এ ভূকম্পন বড় ভূমিকম্পের আভাস।