রাজশাহী গণপূর্ত কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী দেলওয়ার হোসেনকে (২৮) পিটিয়ে জখম করা ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করাসহ সকল চলমান কাজ বাতিল করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানানো হয়েছে।
১৮ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী গণপূর্ত কার্যালয় চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ পিডব্লিউডি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতি এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পিডব্লিউডি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির জেলা শাখার সভাপতি মো. ছাইদুজ্জামান। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. আয়াতুল্লাহ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ গণপূর্ত অধিপ্তর শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের জেলা শাখার সভাপতি বাবর আলী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর স্বপন, ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইইডিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আবদুল নোমান, জেলার সহসভাপতি মেরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মেরাজুল আলম, কাউন্সিলর মোখলেসুর রহমান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বর্তমান করোনাকালীন সময়ে গণপূর্তের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যখন নিজের ও পরিবারের জীবনের তোয়াক্কা না করে দেশের সব সরকারি হাসপাতাল সমূহের চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র চালু রাখতে দৈনন্দিন রক্ষণামূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তখন স্বাধীনতাবিরোধী চক্র শোকের মাস আগস্টে এই ধরণের বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। অনৈতিক সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব নাকচ করে প্রকৌশলীরা যখনই নিম্নমানের কাজ বন্ধ করে দেন তখনই প্রভাবশালী ঠিকাদাররা তাদের ওপর চড়াও হয়। এ রকম অনেক ঘটনা রয়েছে। প্রকৌশলীরা সেসব ঘটনা চেপে যান। কিন্তু এ রকম অবস্থা চলতে পারে না।
এখন থেকে যে ঠিকাদারই প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করবেন তার লাইসেন্সস বাতিলসহ তাকে কালো তালিকাভুক্ত করার দাবি জানান বক্তারা। একইসঙ্গে তারা প্রকৌশলী দেলওয়ার হোসেনের ওপর হামলাকারী ঠিকাদার শাহাবুল মঞ্জু লিটনের ‘সাফির ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড বিল্ডার্সের’ লাইসেন্স বাতিলসহ প্রতিষ্ঠানটির চলমান সকল কাজের কার্যাদেশ বাতিল করার দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী গণপূর্ত কার্যালয়-২ এর উপসহকারী প্রকৌশলী দেলওয়ার হোসেনের অফিস কক্ষেই সোমবার তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। শাহাবুল মঞ্জু লিটন ও আতিকুর রহমান আতিক নামের দুই ব্যক্তি এই প্রকৌশলীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হামলাকারী শাহাবুল মঞ্জু লিটন ও আতিকুর রহমান আতিক নগরীর সাহেববাজার এলাকার আবুল হোসেন নামে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে প্রকৌশলীর কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। ঠিকাদারী এই প্রতিষ্ঠানটি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা ভূমি অফিস নির্মাণের কাজ করছে। সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করা এবং নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে আগের দিন রোববার প্রকৌশলী দেলওয়ার হোসেন কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
আর এ কারণে অফিসে গিয়ে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ তাদের আটক করে। এ নিয়ে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইফতেখায়ের আলম একটি মামলাও করেন।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের রাজপাড়া জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার রাকিবুল ইসলাম জানান, সরকারী কর্মচারীকে কর্তব্য কাজে বাধা প্রদান করে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে গুরুতর জখম, ক্ষতি সাধন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপরাধ গণ্য করে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীদের সোমবারই গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।আজ মঙ্গলবার আদালতে সাতদিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।
রাকিবুল ইসলাম আরও জানান, এই ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকম যারা চালায়, বা যাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আছে সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।