সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান কক্সবাজারে পুলিশের চেকপোস্টে অপ্রত্যাশিত, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্খিতভাবে নিহত হন বলে বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের বিবৃতিতে বলা হয়।
১৭ আগস্ট সোমবার গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে ওই বিবৃতি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, কিছু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ওই ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত বক্তব্য ও অনভিপ্রেত মন্তব্যের মাধ্যমে দুটি ঐতিহ্যবাহী ও ভ্রাতৃপ্রতিম বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপপ্রয়াসে লিপ্ত রয়েছেন।
বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত কনস্টেবল থেকে পরিদর্শক পর্যন্ত সদস্য ও কর্মকর্তাদের সংগঠন। ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফে মেরিন ড্রাইভে পুলিশের চেকপোস্টে গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান । এরইমধ্যে ওই ঘটনায় টেকনাফ থানার ওসি এবং পরিদর্শকসহ পুলিশের সাত সদস্য গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ এসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঢাকার বিমানবন্দর থানার ওসি বি এম ফরমান আলী এবং সাধারণ সম্পাদক ও যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষর করেন।
বিভিন্ন সময়ে পুলিশের নানা দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর মধ্যে সুদীর্ঘকাল পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক বিদ্যমান। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, কিছু-কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি/মহল বা সংগঠন জনগণের কাছে পুলিশ বাহিনীকে বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ওই ঘটনার বিষয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করছেন। দুটি ঐতিহ্যবাহী ও ভ্রাতৃপ্রতিম বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়েছেন। এই অপপ্রচার চলমান বিচারিক ও প্রশাসনিক অনুসন্ধান প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বিবৃতিতে এই ধরনের উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, জনবান্ধব ও গণমুখী পুলিশ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা ও উৎসাহ অব্যাহত রাখতে সবার প্রতি আহবান জানায় পুলিশ এসোসিয়েশন।
পুলিশ এসোসিয়েশন জানায়, ওই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির তদন্ত চলাকালীন সময়ে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। সেনা প্রধান ও পুলিশ প্রধান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তখন তারা যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত পরিবেশে তদন্ত সম্পন্নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ব্যক্তির কোনো দায় প্রতিষ্ঠান বহন করবে না মর্মে দুই বাহিনীর প্রধান ঘোষণা দিয়েছেন। স্বাধীনতা উত্তরকাল থেকে দেশের বিভিন্ন দুর্যোগ ও জরুরি প্রয়োজনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দায়িত্ব পালনের বিষয়টি উভয় বাহিনীর প্রধান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।