টেকনাফে স্বেচ্ছায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় রিমান্ডে থাকা টেকনাফ থানার সদ্য বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ তিন আসামিকে এখনও রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি।
গত ৮ আগস্ট শনিবার দুপুর থেকে ২টার পর থেকে কক্সবাজার জেলা কারাগারের ফটকে অপর চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র্যাব-১৫’র তদন্ত দল। তবে গত ৪ দিনেই মূল অভিযুক্ত তিনজনকে গত তিনদিনেও রিমান্ডে নেয়া যায়নি।
গত ৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজারের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন টেকনাফের ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ৩ আসামিকে ৭ দিন করে রিমান্ড দিয়েছিলেন আদালত। আসামিদের কেন রিমান্ডে নেয়া যায়নি, সে বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে চাননি তদন্তের দায়িত্বভার পাওয়া সংস্থার কেউ।
রিমান্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মামলার এক নম্বর আসামি বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলী, দুই নম্বর আসামি টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তিন নম্বর আসামি পুলিশের সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত।
পাশাপাশি পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন বিচারক।
রিমান্ডে না নেয়ার কারণ সম্পর্কে তদন্তের দায়িত্বভার পাওয়া সংস্থার বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে র্যাবের একটি সূত্র জানায়, তদন্ত কর্মকর্তা সুবিধামতো সময়ে আসামিদের রিমান্ডে নেবেন। স্পর্শকাতর মামলা বিধায় সবকিছু গুছিয়ে তারপরই আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে হয়তো। আবার ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশকিছু অডিও ক্লিপ ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। উঠে এসেছে নানা তথ্য। সেসব বিষয়ও খতিয়ে দেখছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা। সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত তথ্য বের করা হবে। এজন্য আসামিদের রিমান্ডে নিতে বিলম্ব হচ্ছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়িাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
৬ আগস্ট বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ ৭ আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে আত্মসমর্পন করেন। মামলার শুনানীতে র্যাবের পক্ষে প্রত্যেক আসামির ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। চার আসামিকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেয় আদালত। অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।