গতকাল শনিবার বেলা ৩.০০টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে প্রজন্ম একাডেমির উদ্যোগে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিবাদন/বর্তমান সংকটময় মুহূর্তে নতুন সরকারের কাছে জাতির প্রত্যাশা শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রজন্ম একাডেমি’র সভাপতি লেখক ও গবেষক কালাম ফয়েজীর সভাপতিত্বে এবং একাডেমি’র সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন’র পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক জননেতা কমরেড সাইফুল হক, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর আহমেদ, অধ্যক্ষ মো. সালাউদ্দিন ভূইয়া, আন্তর্জাতিক প্রবাসী মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এইচ.এম মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের প্রেসিডেন্ট মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন, দৈনিক খোলা বাজার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আলহাজ্ব মোঃ জহুরুল ইসলাম কলিম, সংগঠনের সহসভাপতি এস এম মিজানুর রহমান, প্রজন্ম একাডেমির অর্থ সম্পাদক আবু হায়দার, বিশিষ্ট সমাজসেবক এড. হেলাল উদ্দিন, সাংবাদিক ও রাজনীতিবীদ মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম পলাশ, গণঅধিকার উচ্চতর পরিষদের সদস্য সাদ্দাম হোসেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম হোসেন, সংগঠনের অন্যতম নেতা নবী হোসেন, প্রফেসর ইয়াকুব আলী, অপরাজিয় বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজী, সাবেক ছাত্র নেতা রমিজ উদ্দিন রুমী, এড. রবিউল হোসেন রবি, গুম হওয়া স্বজনদের পরিবারের সদস্যদের প্রতিনিধি বাবুল আক্তার প্রমুখ। সভার শুরুতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের সকলের জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন শাহজাদা সৈয়দ ওমর ফারুক পীরসাহেব। প্রধান অতিথি বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারন সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের সুযোগ নিয়ে দূর্বৃত্তরা দেশব্যাপী যে নৈরাজ্যিক পরিস্থিতি তৈরি করেছে তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি বলেন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে মতলববাজ কোন মহল যাতে সরকারি বেসরকারি কোন স্থাপনায় হামলা, ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করতে না পারে সে ব্যপারে সবাইকে সতর্ক পাহারা বসাতে হবে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে প্রতিশোধাত্বক কোন তৎপরতায় লিপ্ত না হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবার জন্য স্বশস্ত্র বাহিনি ও জনগনের প্রতি আহ্বান জানান। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এই নৈরাজ্য চলতে দিলে ছাত্র জনতার বিজয় নানাদিক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তিনি জনগনকে ধৈর্য নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতেও উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্বে যে সরকার গঠন হয়েছে আমরা আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে দেশকে একটি স্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে ফিরিয়ে আনবো। দেশে অনেক কিছু এখন সংস্কারের প্রয়োজন। সেই সংস্কার শেষ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিলে জাতির ১৬ বছরের অভিশাপ মুক্ত হবে। অন্যান্য বক্তারা বলেন, দেশের গভীর সংকটময় মুহূর্তে দেশরক্ষায় প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সহ যারা শপথ নিলেন জাতি তাদের কাছে অনেক প্রত্যাশা করেন। নতুন সরকার সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দুর্নীতিমুক্ত এবং অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবে। বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার লক্ষ্যে স্বৈরাচার পতনে এবং দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে খ্যাত এই আন্দোলনে আমাদের বীর ছাত্র সমাজসহ যে বীর জনতা বীরোচিত ভূমিকা রাখেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান, গণঅভ্যুত্থানে দেশে-বিদেশে যে যেখানে অবদান রেখেছে তাদের সকলকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে লুটেরারা এখনও তৎপর। কোন অবস্থায় যেন তারা গণঅভ্যুত্থানের ফসল লুটেরা যেন ধ্বংস করতে না পারে এবং এই মরণপণ সংগ্রামের অগণণ বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন নেতৃবৃন্দ। সভাপতির বক্তব্যে কালাম ফয়েজী বলেন আমরা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পেয়েছি। এখন প্রয়োজন দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনার। যারা এই যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেছে তাদের সর্বোচ্চ সম্মান জানাতে হবে এবং তাদের পরিবারকে ভাতার আওতায় আনতে হবে। এই অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন এবং সম্মুখ লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানান। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রফেসর ইউনূস এর সঙ্গে সকল দূর্যোগ দুঃসময়ে পাশে থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।