জুলাই হত্যাকাণ্ডে দোষীদের মৃত্যুদণ্ড রহিতের প্রশ্নে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বর্তমান বাস্তবতায় মৃত্যুদণ্ড রহিতের সুযোগ নেই। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্কের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগ সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে টুর্ক বেশি প্রশ্ন করেছেন। তিনি মৃত্যুদণ্ড রহিত করার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, এটা রহিত করার সুযোগ আছে কি না। আমরা বলেছি, বর্তমান বাস্তবতায় মৃত্যুদণ্ড রহিতের সুযোগ নেই। পেনাল কোডে (দণ্ডবিধি) মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা আছে। হুট করে এটা পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জাতিসংঘ তাদের পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিয়েছে। ফলকার টুর্ক সরকারের সংস্কারকাজেও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি দুটি প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। এক. বিচার বিভাগ স্বাধীন করা। দুই. মৃত্যুদণ্ড রহিত করা।
আসিফ নজরুল বলেন, যে ফ্যাসিস্ট সরকার হাজার হাজার শিক্ষার্থী মেরেছে, তাদের বিচারকে সামনে রেখে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করার প্রশ্নই আসে না। এটা প্রত্যাশা করার সুযোগ নেই।
ফলকার টুর্ক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে খসড়া চেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘আমরা সেটি (খসড়া) দেব।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সব ধরনের আইনি অধিকার দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন আসিফ নজরুল। জাতিসংঘ বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী করতে বলেছে বলেও জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, সরকার চাইলে জাতিসংঘের কাছ থেকে ফরেনসিক বা কারিগরি সহযোগিতা নেবে। সুবিচার করা হবে। কোনো অবিচার হবে না। আগে যেমন অবিচার হয়েছে, এবার তেমন হবে না।
এর আগে আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠক শেষে ফলকার টুর্ক সাংবাদিকদের বলেন, আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার নিয়ে তার কথা হয়েছে। দুটি বিষয় একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বর্তমান সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, এ ক্ষেত্রে মানবাধিকার যেন নিশ্চিত করা হয়, সে বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।
টুর্ক বলেন, জুলাই গণহত্যার বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান কমিটি কাজ করছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। আমাদের প্রধান কার্যালয় পুরো বিষয় পর্যবেক্ষণ করছে।