খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন খুলনা সদর থানা প্রাঙ্গণে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা মহোদয় খুলনা সদর থানার মানব পাচার মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোছাঃ শারমিন আক্তারের গ্রেফতার সংক্রান্ত বিষয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানের আয়োজনে মিলিত হন। এ সময়ে কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রেস বিফ্রিংয়ে বলেন, “খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ অপরাধ দমন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এবং নগরবাসীর সেবায় সর্বদাই তৎপর রয়েছে। আমরা বিগত কয়েক মাস থেকেই খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ জোনেও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, নাশকতাকারী, স্বর্ণ চোরাচালানকারী, মাদক ব্যবসায়ী, জঙ্গি, অস্ত্র-গোলাবারুদ ব্যবসায়ী, চোরাই মোটরসাইকেল, জুয়াড়ি, বিকাশ এবং অনলাইন প্রতারণায় জড়িত প্রতারক, সাজাপ্রাপ্ত পরোয়ানাভুক্ত, হত্যাকান্ডে জড়িত আসামী এবং ভূমিদস্যুদের গ্রেপ্তার করতে সাঁড়াশী অভিযানের মাধ্যমে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল দুপুরে খুলনা থানাধীন বাইতিপাড়াস্থ “মা ও শিশু কল্যাণ সংস্থা মেটার্নিটি” ক্লিনিকে বাদী মোঃ আশিক শেখের স্ত্রী মোছাঃ আশা খাতুনের একটি মেয়ে সন্তান প্রসব করে। পরবর্তীতে বাদীর স্ত্রী অজ্ঞান থাকা অবস্থায় নবজাতক শিশুটি বাদীর শাশুড়ী মোছাঃ লাভলী খাতুনের নিকটে থাকে। এমতাবস্থায় ঘটনার দিনের বিকালে আসামী মোছাঃ শারমিন আক্তার বাদীর শ্বাশুড়ীকে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখিয়ে সু-কৌশলে নবজাতক শিশুটিকে খুলনা থানাধীন বাইতিপাড়াস্থ “মা ও শিশু কল্যাণ সংস্থা মেটার্নিটি” ক্লিনিক হইতে অপহরণ করে। এ সময়ে আসামী রিক্সা যোগে রওনা করলে রিক্সার চালক মোঃ হুমায়ুন কবিরের সন্দেহ হলে তিনি খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে হতে আশপাশের লোকজনদেরকে ডাকচিৎকার দেয়। অতঃপর আশপাশের লোকজন এসে আসামী মোছাঃ শারমিন আক্তার ও নবজাতক শিশুকে আটক করে। পরে এ সংক্রান্তে খুলনা থানার মামলা নং-০৭, তারিখ-১২/০৫/২০২০ ধারা-২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ১০(২) মামলা রুজু করা হয়। উপরোক্ত ঘটনায় খুলনা থানায় এসআই(নিঃ) বি,এম মনিরুজ্জামান তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে বস্তবতা ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে নগরীর খুলনা সদর থানার অভিযোগপত্র নং-১৬০, তারিখ-৩১/০৭/২০২০ ধারা-২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ১০(২) ধারাই বিজ্ঞ আদালতে বিচারের রায়ের নথিপত্র দাখিল করে। মানব পাচার মামলায় দন্ডিত আসামী অদ্যাবধি পলাতক থাকার কারণে আসামী মোছাঃ শারমিন আক্তারের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালত হতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত গ্রেফতারী পরোয়ানা মামলার রায়ের সার্বিক বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতের বিচারক খুলনা সদর থানায় ইস্যু প্রেরণ করেন। অতঃপর ১০ জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খুলনা সদর থানার চৌকোস অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম বাগেরহাট জেলার রামপাল থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গতকাল গভীর রাতে বাগেরহাটের গৌরাম্ভা এলাকার নিজ বাসা হতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোছাঃ শারমিন আক্তারকে নারী পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়। অত্র আসামীকে গ্রেফতারের বিষয়টি ভিকটিমের পরিবারের সদস্যদেরকে অবহিত করা হলে ভিকটিমের পরিবার আসামী গ্রেফতারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে খুলনা সদর থানা প্রাঙ্গনে গতকাল বুধবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেন খাঁন এবং পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নিমাই কুমার কুন্ড, এস আই সুকান্ত দাসসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ।