মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা যমুনা নদীর পয়েন্টে এই অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব শুরু হয়। জানা যায়, শিবালয়ের নব-নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম খানের বালু মহালের ইজারার মেয়াদ শেষ হয় বিগত ২ মাস আগে। তবে মেয়াদ শেষ হলেও থেমে নেই ড্রেজার দিয়ে অবৈধ ভাবে কাটার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন। সড়জমিনে গিয়ে দেখা যায়, আরিচা যমুনা নদীর পয়েন্টে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে এই বালু উত্তোলন করে প্রত্যেকদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম খান। এসব অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য দেখাশোনা করেন রেজাউল নামে এক ব্যক্তি যিনি রহিম খানের ম্যানেজার নামে পরিচিত। কাটার মেশিনে থাকা আব্দুল হালিম জানায়, আমরা একমাস যাবত এখানে আছি। এই ড্রেজার খান সাহেব (আব্দুর রহিম খান) চালায়। কিন্তু দেখা শোনা করে রেজাউল ভাই। বল গেটে থাকা নূর আলম নামে এক শ্রমিক জানায়, আমরা এখান থেকে এক টাকা ফিটে বালি কিনে নিচ্ছি। রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা বালু দিয়ে আসি। আমাদের কোনো প্রকার স্লিপ বা টোকেন দেয়া হয় না। ড্রেজারে থাকা আরেক শ্রমিক জানায়, কাটার মেশিন পরিচালনার জন্য মাসে দেড় লাখ টাকা ভাড়া দেন আব্দুর রহিম খান। বিগত এক মাস যাবত আমাদের এই কাটার মেশিন চলছে। বালু গুলো সিএন্ডবি ঘাট ফরিদপুর ও রাজবাড়ীর বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। এ বিষয়ে রহিম খানের ম্যানেজার রেজাউলের সাথে কথা বললে তিনি জানান, গতবার ইজারা নিয়ে আমাদের ক্ষতি হয়েছে, তাই আমরা বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছি। এছাড়াও আরিচা বেরিবাদ সংযুক্ত এলাকায় আরো বেশ কিছু অবৈধ ড্রেজার চলতে দেখা যায়। যেগুলো পরিচালনা করে প্রভাবশালী মহল ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। পাটুরিয়া নৌ-থানার ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি আংশিক শুনে প্রতিবেদকের ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে ফোন দিয়ে বলেন আপনাদের সাথে রেজাউল এখনো দেখা করে নাই? আপনার ওইখানে বসে আছেন কেনো চলে আসেন। জনমনে প্রশ্ন আসতে পাড়ে! নৌ পুলিশের কর্মকর্তাকে ফোন দিলে ঘটনা শোনার পর তিনি কোনো মন্তব্য না করে কেনো কল কেটে দিলো? এবং পরবর্তীতে তিনি ফোন করে কেনো রেজাউলের সাথে দেখা করার কথা বললো? বিষয়টি নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। গত বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব অবৈধ ড্রেজার, কাটার মেশিন ও বাল্কহেডের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিবালয় উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম ফয়েজ উদ্দিন। এবং ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৬টি ড্রেজার মেশিন, এক কাটার মেশিন ও একটি বলগেট অকেজো করা হয় এবং বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় ২ লাখ ১০ হাজার অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম খানকে একাধিকবার ফোন করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বেলাল হোসেন বলেন, এ ধরনের অভিযান অব্যাহত আছে এবং জনস্বার্থে ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।