কামারখন্দে সন্তানের পা জড়িয়ে ধরেও রক্ষা হয়নি বৃদ্ধা মায়ের, বার বার বলছিলাম বাবা আমাকে মেরো না-তারপরেও ছেলে আমাকে ছাড়েনি। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমার শরীরের বিভিন্নস্থানে পিটিয়ে জখম করে দিয়েছে। নিজ ছেলের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার কামারখন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে আহত (৬০) বছরের বৃদ্ধা মা শাহনাজ খাতুন কান্নাজড়িত কন্ঠে এমনইভাবে ছেলের নির্যাতনের কথা বর্ননা করেন। তিনি বলেন, ছেলে শাহআলম ঋণগ্রস্ত রয়েছে। ছেলের ঋণ পরিশোধে আমার ও স্বামীর হজ্বের জন্য ব্যাংকে রাখা টাকা অথবা জমি লিখে না দেয়ায় ছেলে ও পুত্রবধু তাকে এমনভাবে মারপিট করেছে। এর আগেও ছেলের বউ তাকে দুবার মারপিট করেছে। আহত বৃদ্ধা মা ছেলের এমন শাস্তি দাবী করেছেন, যাতে অন্য কেউ মাকে এভাবে মারধর না করেন। আহত বৃদ্ধা শাহনাজ খাতুন হায়দারপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী। বৃদ্ধা মা শাহনাজ খাতুন আরো বলেন, ছেলের বউয়ের সাথে সামান্য ঝগড়া হওয়ায় ছেলের বউ মনিজা খাতুন আমাকে মারধর করে। দু‘ঘন্টা পর ছেলে শাহ আলম বাড়ীতে এসেই আমার হাটাচলার জন্য ব্যবহৃত লাঠি কেড়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে। আমি মাটিতে পড়ে ছেলের দুপা জড়িয়ে ধরলেও সে আমাকে ছাড়েনি। আমি সামাজিকভাবে তার শাস্তি চাচ্ছি। যাতে অন্য কেউ মাকে এমনভাবে মারধর না করেন। ছেলের বউ মনিজা খাতুন শ্বাশুড়ীকে মারধর করেনি বলে জানিয়ে বলছেন, শ্বাশুড়ী তার অন্য ছেলে-মেয়েকে টাকা-পয়সা জমি দিলেও আমার স্বামীকে দেয়নি। সব সময় ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এ জন্য সেদিন তার ছেলে তাকে মারপিট করেছে। রায়দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরহাদুল হক হ্যাপি বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরেই এলাকাবাসীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। দ্রুতই বিচার-শালিস করে মিমাংসা করে দেয়া হবে। কামারখন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো.বিজয় হোসেন জানান, আহত শাহনাজ খাতুনের মাথায় ৩টা সেলাই দেওয়া হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশে জখমের দাগ রয়েছে। এখন আগের চেয়ে অবস্থা অনেকটাই ভালো। কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহা. রেজাউল ইসলাম জানান, এবিষয়ে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।