চীন ও বাংলাদেশের যৌথ বিনিয়োগে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ এলাকায় ৬৮ মেগাওয়াট সক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিদ্যুৎ ভবনে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ে পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (পিপিই) সই হয়েছে। একই সঙ্গে ইমপ্লিমেন্টেশন এগ্রিমেন্ট (আইএ) সই হয়েছে। কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোডর্কে (বিপিডিবি) প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা (ইউনিট) বিদ্যুতের দাম দিতে হবে ১০ দশমিক ২০ ইউএস সেন্ট। ৮৭ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৯২১ কোটি টাকা) ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ-চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড (বিসিআরইসিএল)। যৌথ অর্থায়নে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৫০ শতাংশ মালিকানায় রয়েছে নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং বাকি অর্ধেক মালিকানা চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি)। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশে সোলার প্রজেক্ট করার মতো অকৃষি জমি পাওয়া দুষ্কর। যতটা অকৃষি জমি পাওয়া যায়, তাতেই সোলার বা নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ থেকে দ্রুত দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ চলমান রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষে যুগ্ম সচিব নিরোদ চন্দ্র মন্ডল এবং বিপিডিবির পক্ষে বোর্ড সচিব মোহাম্মদ সেলিম রেজা ও বাংলাদেশ-চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষে কোম্পানির সচিব বিমল চন্দ্র রায় চুক্তিতে সই করেন। ৬৮ মেগাওয়াট সোলার পার্ক নামে এ প্রকল্পে ইপিসি ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে চীনা কনসোর্টিয়াম অব প্যারিওশেন-ফেডি-সিনোহাইড্রো। সংস্থাটির সঙ্গে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি চুক্তি সই হয়। কারিগরি পরামর্শক হিসেবে রয়েছে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান জেডটেনকো লিমিটেড। টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিসিআরইসিএল। সিরাজগঞ্জ ৬৮ মেগাওয়াট সোলার পার্কটি সংস্থাটির প্রথম বিদ্যুৎ প্রকল্প। এরই মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। সংস্থাটির আওতায় পাবনায় ৬৪ মেগাওয়াট আরো একটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে পিপিই ও আইএ সইয়ের কথা জানিয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীর পায়রায় ৫০ মেগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে উদ্যোগ নিয়েছে বিসিআরইসিএল। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান মুনীরা সুলতানা, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া, এনডব্লিউপিজিসিএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএম খোরশেদুল আলম উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎসহ উৎপাদনক্ষমতা ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, এরই মধ্যে ২৫৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসছে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে।