র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সাবির্ক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং খুন, অপহরন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী গ্রেফতারে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যায় র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন কদমতলী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার মামলা নং-৮১(৫)২১, ধারাঃ ৩০২/৩৪ দÐবিধি। উল্লেখিত চাঞ্চল্যকর পরকীয়ার জেরে স্ত্রী কর্তৃক স্বামী হত্যা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানাভূক্ত পলাতক আসামি উর্মি আক্তার (২৭), স্বামী-মৃত মারুফ কাজী, সাং-শুভাড্যা উত্তরপাড়া, থানা-দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ, জেলা-ঢাকা’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জানা যায় যে, ভিকটিম মারুফের স্ত্রী উর্মির সঙ্গে ইমরানের দীর্ঘ দিনের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তারা একে অপরকে লুকিয়ে বিয়ে করার জন্য চেষ্টা করে। এতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় উর্মির স্বামী মারুফ। আর এই বাঁধাকে সড়িয়ে ফেলার জন্য উর্মি ও ইমরান মিলে উর্মির স্বামী মারুফকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ মে ২০২১ খ্রিঃ তারিখ রাতে মারুফকে কৌশলে বাইরে নিয়ে গিয়ে মদপান করান ইমরান। অতঃপর গত ২২ মে ২০২১ খ্রিঃ তারিখ মারুফ রাত আনুমানিক ০২:০০ ঘটিকার সময় ঘরে ফেরেন। এসময় মারুফকে তার স্ত্রী উর্মি ট্যাংয়ের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করান। এতে মারুফ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে উর্মি পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মারুফকে হত্যার জন্য তার প্রেমিক ইমরানকে খবর দেন। অতঃপর ঐদিন আনুমানিক সকাল ০৬:০০ ঘটিকায় ইমরান এসে মারুফের ঘরে প্রবেশ করে। তার কিছুক্ষণ পর উর্মি ও ইমরান দুজনে মিলে তাদের পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক শক্ত হাতুড়ি দিয়ে মারুফের মাথায় সজোরে আঘাত করে। যার ফলে মারুফ ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরন করেন। উক্ত ঘটনার পর উর্মি ও ইমরান হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি ও রক্তমাখা জামাকাপড় পাশের ডোবার পানিতে ফেলে দিয়ে দুজনই ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। উক্ত হত্যাকাÐের পর মৃত মারুফ এর পরিবারের লোকজন বাদী হয়ে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় মারুফের স্ত্রী উর্মি ও উর্মির প্রেমিক ইমরানের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার ভিত্তিতে পুলিশ উর্মি ও ইমরানকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে উর্মি জামিনে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।উক্ত ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল পলাতক আসামি উর্মিকে গ্রেফতারের লক্ষে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২৭/০৯/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন কদমতলী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর পরকীয়ার জেরে স্বামীকে নৃসংশভাবে হত্যা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক আসামি উর্মি’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।