পোকা পেয়ারার বড় শত্রু, তাই পোকার আক্রমণ, ময়লা, ছিদ্র দাগ থেকে সুরক্ষার জন্য প্রতিটি পেয়ারায় ‘পলিথিন ক্যাপ’ ব্যবহার করছে চাষিরা। এতে চাষিরা ভালো সুফল পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আরশেদ আলী । আমাদের অর্থনীতিকে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত ‘থাই-৩’ হাইব্রিড জাতের পেয়ারাসহ থাই-৫ ও ৭ জাতের পেয়ারা চাষ করছেন এলাকার চাষিরা। এই পেয়ারা পাওয়া যায় বছরের বারো মাস। সব খরচ বাদ দিয়ে তারা প্রতি বিঘায় দুই লাখ টাকা ঘরে আনার স্বপ্ন দেখছেন। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা জুড়ে পেয়ারা চাষ হলেও সবচেয়ে বেশি হয় কামারখন্দ, উল্লাপাড়া, বাগবাটি, বেলকুচি, সলংগা, রায়গঞ্জসহ বেশ কিছু এলাকায় এ চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে দিন দিন। সদর উপজেলার এবার চাষিরা ৪শত বিঘা জমিতে পেয়ারা চাষ করছেন কৃষি বিভাগের পরার্মশ ও সহায়তায়। তবে তাদের পরার্মশ ছাড়া ব্যক্তিগত নিয়মেও অনেকে পেয়ারা চাষ করেছেন বলে জানান তিনি। উত্তর সারটিয়া এলাকার শালদাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসান আলী এবং শিয়ালকোল ইউনিয়নের নতুন ফুলবাড়ি পূর্ব পাড়া এলাকার হাফেজ সাইফুল ইসলামের পেয়ারা বাগানে সরেজমিনে গেলে তারা বলেন, আমার ১৫ বিঘা জমিতে থাই পেয়ারা চাষ করে খরচ বাদে মৌসুম শেষে ১৫ লাখ টাকা লাভের আশা করছি। বিঘা প্রতি সব মিলিয়ে খরচ পড়ে ৫৫/৬০ হাজার টাকা। আর ফলন পাওয়া যায় দেড় থেকে দু’লাখ টাকা। প্রথম বছর তাই খরচ একটু বেশি। তবে, দ্বিতীয় বছর থেকে খরচ অর্ধেক নেমে আসবে এবং ফলনও পাওয়া যাবে দ্বিগুণ। পেয়ারা ক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে কলা, পেঁপে ও সবজি, কুল, উন্নত জাতের আম, চাষ করা যায়। এগুলো বিক্রি করেও বছরে তার অন্তত ৬ লাখ টাকার উপরে আয় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সাইফুল ইসলাম। বর্তমানে তার বাগান রয়েছে দুইটি। ভালো ফলনের জন্য নিয়মিত সেচ ও সার দিতে হয়। বাগান পরিচর্যার জন্য ৬ থেকে ৭ জন লোক রাখার পাশাপাশি ব্যাপক শ্রমও দিতে হয় বলে জানান । এছাড়া, সরকারের দ্বিতীয় শস্য বহুমুখী প্রকল্পের আওতায় পেয়ারার বাগান করার জন্য কৃষকদের কৃষি বিভাগের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে।