স্মরণকালের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে উপজেলার ৯ ইউনিয়েনের বহু ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মাছের প্রজেক্ট, আবাদ কৃষি জমি ও বীজতলা তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ তিন জন মৃত্যু হয়েছে। একজন এখনো পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে। মৃতরা হলেন বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র জুনায়েদুল ইসলাম জারিফ (২০), আসহাব উদ্দিন মিয়া (৬০) ও কৃষক আবদুল মাবুদ (৫০)। তাদের সবার বাড়ি উপজেলার আসিরাবাদ ইউনিয়নে। এছাড়া মো. সাকিব নামে এক কলেজছাত্র এখনো নিখোঁজ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে বন্যার পানি নামার কারণে এলাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা করেছে স্থানীয়রা। তবে কোনো কোনো এলাকা এখনো পানির নিচে ডুবে আছে। উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম ইউনুচ জানান, আমার ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। নিহত তিনজনের বাড়ি এই ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নের ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে। মাটির ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। সব মাছের প্রজেক্ট তলিয়ে গেছে। টংকাবতী খালের অংশসহ প্রায়ই গ্রামীণ সড়ক, রাস্তা-ঘাট ভেঙে গেছে। এ ব্যাপারে আধুনগরের ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন জানান, বন্যায় ১৫০-২০০ শতাধিক মাটির ঘর-কাঁচা ঘর বিধস্ত হয়েছে। ইউনিয়নের অধিকাংশ সড়ক ভেঙে গেছে। ডলু খালের পাড় ভেঙে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী শফিউল ইসলাম বলেন, বর্ষণ ও ঢলে উপজেলার ১৭০ হেক্টর আউশ ও ৩ হাজার ৭শত ৫৩ হেক্টর আমন চাষ ও ৩৫৯ হেক্টর আমন বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়াও খরিপ-২ এর ২১৫ হেক্টর সবজি চাষ, হেক্টর পেঁপে বাগান ১৩ হেক্টর পানের বরজ পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে বৃষ্টি না হলে উপজেলায় কৃষিক্ষেত্রে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানা যাবে বলে তিনি জানান। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম শাওন বলেন, এই পর্যন্ত উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাতে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।