খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ করোনা পরীক্ষার নামে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা আত্মসাতে দুদকের মামলায় ওএসডি হয়েছেন। তাকে ঢাকা মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ ওএসডি হওয়ার কারণে খুলনার নতুন সিভিল সার্জন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সবিজুর রহমান। গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ আলমগীর কবীর স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তাকে ওএসডি করা হয়। এর আগে একই দিন দুপুরে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে করোনা পরীক্ষার ফি’র ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা ৪৪ হাজার টাকা আত্মসাতের মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। দুদক জানায়, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট খুলনা জেনারেল হাসপাতালে বিদেশগামী যাত্রী ও সাধারণ কোভিড-১৯ রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে প্রেরণ করা হতো। তবে, ল্যাবে যে পরিমাণ নমুনা পাঠানো হতো তার থেকে রোগীর সংখ্যা কম দেখিয়ে টেস্টের ফি’র টাকা সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করা হয়। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত মোট ফি আদায় করা হয়েছিল ৪ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ১০০ টাকা। সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছিল ১ কোটি ৬৮ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ টাকা। বাকি ২ কোটি ৬১ লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা আত্মসাৎ করেন খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ। এ ঘটনায় দুদকের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর একটি মামলা করেন। উক্ত মামলার তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার তিনি সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার আসামিরা হলেন যথাক্রমে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) প্রকাশ কুমার দাস, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মোঃ রওশন আলী, ক্যাশিয়ার তপতী সরকার, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ এস এম মুরাদ হোসেন এবং তৎকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করা খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মদ ও সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ। ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মদ বর্তমানে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। উক্ত চার্জশিটে বলা হয়েছে, পরস্পর যোগসাজশে সরকারি রশিদ বইয়ের বাইরে ডুপ্লিকেট রশিদ বই ব্যবহার করে তারা উক্ত টাকা আত্মসাৎ করেন। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী খুলনায় দ্বিতীয় দফায় সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদান করেন ডাঃ সুজাত আহমেদ। এর আগে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর ডাঃ নিয়াজকে গোপালগঞ্জ থেকে খুলনা সিভিল সার্জন অফিসে বদলির নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী ডাঃ নিয়াজ ওই বছরের ১৭ ডিসেম্বর খুলনায় সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদান করেন। তার আগে খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদকে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন হিসেবে বদলি করা হয়। ১৫ ডিসেম্বর তিনি গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদান করেছিলেন। এমতাবস্থায় বিভিন্ন দুর্নীতির দায়ে খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ ওএসডি হলেন।