সাহারুজ্জামান সৌরভ (২৮), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একজন সফল ডিজিটাল উদ্যোক্তা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অবস্থায় নিজেই উদ্যোক্তা হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। সমাজ বিজ্ঞানে অনার্স অধ্যায়নকালীন সময়ে আউটসোর্সিংও ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য নিজেকে প্র¯‘ত করেন। পরে চাকরী করবো না, চাকরীদেব এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে সর্বপ্রথম ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি বাণিজ্যিকভাবে জাইনিকল্যাব নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সূচনা করেন। পড়ালেখার পাশাপাশি ক্ষুদ্র পরিসরের প্রতিষ্ঠানটি ধীরে ধীরে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। যা বর্তমানে একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়েছে। তিনি খুলনার রূপসা উপজেলার রামনগর গ্রামের মরহুম নবীউজ্জামান বাবলুর ছোট পুত্র। বর্তমানে তার কোম্পানীতে তৈরিকৃত ১০ রকমের সফটওয়্যার দেশের বাইরে সুনামের সঙ্গে বাজারজাত করা হ”েছ। তার মধ্যে রয়েছে লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, রাইটিং টুলএআই, প্রপার্টি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ডিজিটাল স্টক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ই-কমার্স, ডক্টর ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, জেনারেট ইমেজ ইউজিং এআই, নো কোড ইউজ করে যে কোন ধরনের সফটওয়্যার, গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ইউআইইউ এক্স ডিজাইন। যাদের হাতের ছোয়ায় এ সমস্ত সফটওয়্যার তৈরী হচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ১০ জন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারসহ ওয়েভফ্লো ডেভলপার, ফ্রন্টইন্ড ডেভলপার, ইউআইইউ এক্স ডিজাইনার, মোশন ডিজাইনার। বর্তমানে সাহারুজ্জামান সৌরভের প্রতিষ্ঠানে ২০ জনের অধিক চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিনি কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি আরো সম্প্রসারণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত চাকরি মেলায় তার জনবল বাড়াতে স্টল দেয়া হয়। সেখানে তার প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য অসংখ্য আবেদন জমা পড়েছে। তাদের মধ্যে থেকে বাছাই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির সিইও সাহারুজ্জামান জানান। তিনি বলেন, খুব শীঘ্রই তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। তিনি আরো জানান, লেখা-পড়া শিখে চাকরীর জন্য অপেক্ষা না করে সবাই যদি নিজের মত করে কিছু একটা শুরু করে তাহলে সফলতা একদিন আসবেই। বেকারত্ব দূর হবে। সেই সাথে সমৃদ্ধ হবে আমাদের সোনার বাংলাদেশ। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, খুলনায় শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য একটি বড় সফটওয়্যার কোম্পানী নির্মাণ করতে চাই। যেখানে কমপক্ষে পাঁচশতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। যাদের কাজে দেশের জন্য রেমিটেন্স আয় করে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে। কোম্পানীর সিটিও’র দায়িত্বে রয়েছে মাসুম বিল্লাহ। তিনি বলেন, চাকরী সংকটের এই বাজারে খুলনায় বসে ভাল সুযোগ সুবিধা পেয়ে এখানে আমরা বেশ ভালই আছি। মাস শেষ হওয়ার আগেই ব্যাংক একাউন্টে বেতন ঢুকে যায়। সরকার ঘোষিত সকল ছুটি ভোগ করতে পারি। এছাড়াও মানষিক প্রশান্তির জন্য বছরে দু’একবার ভ্রমনের সুবিধা পাই। বিনোদনের ব্যবস্থাও আছে। সব মিলিয়ে আমরা একটি পরিবারের মত মিলেমিশে বলা যায় অনেক ভাল আছি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোসাম্মৎ হোসনে আরা বলেন, অবশ্যই এটা ভালো উদ্যোগ। সে নিজে কাজ করছে, পাশাপাশি অন্যরাও কাজের সুযোগ পাচ্ছে। তার মঙ্গল কামনা করি। খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসীর আরাফাত বলেন, ফ্রিলান্সার এবং উদ্যোক্তা তৈরির ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছা রয়েছে। উদ্যোগটি যদি পজেটিভ হয়, তাহলে যত ধরণের সরকারী সহায়তা রয়েছে আমরা তাকে করবো।