মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তাল পাতার হাত পাখা তৈরি করে ব্যস্ত সময় করছে পার, পাখা পল্লীর পুরুষরা কারিগররা অনেক কষ্ট করে বাঁশ বেয়ে তাল গাছ থেকে গরমের আগে শীতের মৌসুমে পাতা সংগ্রহ করে পানিতে জাগ দেয় এবং রোদ্রে শুকিয়ে ঘরে মজুদ করে রাখেন। এছাড়া বাঁশ কেঁটে শলা উঠিয়ে শুকিয়ে সুতায় বাহারি রংয়ে রাঙিয়ে পাখা তৈরি কাজের উপযোগী করে তোলেন। এ পল্লীর পুরুষ ও নারী কারিগরদের সংসার জীবনের পাশাপাশি তালপাতার হাত পাখা তৈরি করে অনেক পরিবারের তাদের জীবিকা উপার্জন করছেন। পাখা পল্লীর নারীরা যখনই সময় পান তখনই ঘরের সামনে, বারান্দায় বা গাছের নিচেয় বসে মনের মাধুরী দিয়ে নিপুণ হাতে দক্ষ নারী কারিগরা নানা রকমের ডিজাইনে তৈরি করে। তালপাতার হাত পাখা গরমকালে চাহিদা অনেক বেশি থাকে, কারন এ সময়ে অনেক তাপদাহ থাকে। আর তালপাতার হাত পাখার শীতল বাতাসে অল্প সময়ের মধ্যে শরীরকে ঠাণ্ডা করে। বিভিন্ন রঙের সুতা দিয়ে তৈরি করা পাখা দেখতে অনেক সুন্দর দেখা যায়। উপজেলার নহাট পাখা পল্লীর কারিগর মো. ওহাব বিশ্বাস জানান, প্রতিপিস পাখা তৈরীতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ টাকা খরচ রয়েছে। স্থানীয় হাট বাজারে ছোট পাখা ৬০ টাকা আর বড় পাখা ৭০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করছেন তিনি। অনেক পাইকারী ব্যাপারী সিজিনের আগেই অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখেন, যা দিয়ে আমরা খরচ করি সংসার চালায়। এবং প্রথম পাখা উঠলে হাতপাখা তৈরীর সাথে সাথে ওই পাইকারী ক্রেতার পাখা আগে পরিশোধ করতে হয়। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার নহাটা ইউনিয়নের সর্ববৃহৎ দক্ষিণ পাশে অবস্থিত বিশ্বাসপাড়ায়, বাপ দাদার আমলের এই পেশাকে ধরে রেখে পাখা পল্লীতে তৈরি হচ্ছে হাতপাখা। স্থানীয়রা জানান, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, যশোহর, নড়াইল, মাগুড়া, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে ব্যাপারীরা এসে পাইকারী ক্রয় করছেন হাতপাখা। কারিগর জাহানারা বেগম জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই পেশাকে ধরে রেখেছি। সরকারি ভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে আমরা এই শিল্পকে আরো কাজে লাগাতে পারবো। আমাদের পল্লীর বেশিরভাগ পরিবার আয় করি সিজিনাল ভাবে তালপাখা তৈরি করে এবং পরিবার-পরিজন নিয়েন জীবন যাপন করি। উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের ডুমুরশিয়া গ্রামের ফুলমিয়া ও রেজাউল, গোপালনগর গ্রামের বিশু মিয়া, ধূলজুড়ী গ্রামের টুকু বিশ্বাস, সিদ্দিক বিশ্বাস, সহ বিভিন্ন পরিবার বাণিজ্যিক ভাবে তালপাতার তৈরি হাত পাখা তৈরি করছেন। এ বিষয়ে নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তৈয়েবুর রহমান তুরাপ জানান, নহাটা বিশ্বাস পাড়া পাখা পল্লীর বাসিন্দাদের ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারি সবধরনের সহযোগিতা পেয়ে থাকে। যদি সরকারি ভাবে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে এ শিল্পটাকে আরো গতিশীল রাখতে আমার সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।