সিরাজগঞ্জের তাড়াশে অধিকাংশ সময় চলছে লোডশেডিং। একই সঙ্গে চলছে দাবদাহ। বিশেষ করে বিদ্যুৎ স্বল্পতায় বোরো ধানের ক্ষেতের সেচকাজ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রা ও জমিতে পানি না থাকায় ধানের ফলন বিপর্যয়ের ঝুঁকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। এদিকে রমজান মাসে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোজাদারদের। তাছাড়া ঈদের মাত্র কয়েকদিন পরেই এসএসসি পরিক্ষা। লোডশেডিংয়ে পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে বলে জানিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। তাড়াশ পৌর এলাকার বৃ-পাচান গ্রামের নারী কৃষক মুন্নি আহমেদ বলেন, দিন ও রাতের যেটুকু সময় বিদ্যুৎ পাওয়া যায় তাতে ৯ বিঘা জমিতে পানি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সোমবার সারাদিনে ৫ বার লোডশেডিং দেওয়া হয়েছে। তিনদিন ধরে চেষ্টা করে ৯ বিঘা জমিতে পরিপূর্ণভাবে পানি দিতে পারি নাই। প্রখর রোদ ও গরমের কারণে জমির পানি তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাচ্ছে। সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম ও মাসুদ রানা বলেন, পুরোদমে ধান কাটা শুরু হতে আর ২০ থেকে ২৫ বাকি। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০ থেকে ১২ বার বিদ্যুৎ চলে যায়। ১ বার গেলে দেড় ঘণ্টা ধরে আসে না। পানির অভাবে ধানের ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা আরও বলেন, বেশিরভাগ জমিতে বিদ্যুৎ চালিত সেচযন্ত্র দিয়ে পানি দেওয়া হয়। পানির জন্য হাহাকার অবস্থা! সোমবার দেখা গেছে, বৃ-পাচান গ্রামের বড় গা মৌজার অধিকাংশ বোরো খেত শুকিয়ে গেছে। নারী কৃষক মুন্নি আহমেদ তার জমিতে পানি সেচ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। রুহুল আমীন তপু, রাকিবুল হাসান ও ইমরান হাসান বলেন, ইফতারি, তারাবির নামাজ ও সেহেরির সময়েও বিদ্যুৎ থাকে না প্রায়দিন। লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সানজিদা, মীম ও হাফছা খাতুন বলেন, এ মাসের ৩০ তারিখ থেকে এসএসসি পরিক্ষা শুরু হবে। লোডশেডিংয়ের কারণে পড়ালেখা করতে অসুবিধা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, যেসব খেতের ধানের শীষ বের হচ্ছে পানির অভাবে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির তাড়াশ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নিরাপদ কুমার দাস লেন, সেচকাজ ও রোজার মাসে একই সঙ্গে বেশি বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। এ জন্য লোডশেডিং হচ্ছে। বৃষ্টি হলে সমস্যা অনেকটা কেটে যাবে।