মুক্তিযোদ্ধা চলাকালীন সময় মাত্র ৮ বছর বয়সে ভারতের ট্যাটরা ক্যাম্পে ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধার তালিকাভূক্ত হয়েছেন খুলনার তেরখাদা উপজেলার কোলা গ্রামের বাসিন্দা গাউস মোল্লা। তিনি ঐ গ্রামের ইমান উদ্দীন মোল্লার পুত্র। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় একই উপজেলার বাসিন্দা ঢাকা কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের প্রশিক্ষণ, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক এম এ আলম তদন্তপূর্বক আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, তেরখাদা উপজেলার কোলা গ্রামের বাসিন্দা গাউস মোল্লার জন্ম তারিখ জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে ১৯৬৩ সালের ১লা জানুয়ারি। সেই অনুযায়ী যুদ্ধকালীন সময়ে তার বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর। এত অল্প বয়সে কিভাবে ভারতের ট্যাটরা ক্যাম্পে গিয়ে ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধার তালিকাভূক্ত হন। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের ভিতর সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে আসলেই তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন কিনা? ফলে তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য বের করার দাবী জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন এম এ আলম। এছাড়া তিনি আরো জানান,গাউস মোল্লার বড় বোন বড়ু বিবির জন্ম জাতীয় পরিচয় অনুসারে ১৯৫৭ সালে। তাহলে তার জন্ম ১৯৫২ সালে হয় কিভাবে। যা প্রশাসন তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে। বিষয়টি নিয়ে গাউস মোল্লার বড় বোন বড়ু বিবি জানান, আমরা ৭ ভাই-বোন। তার মধ্যে গাউস মোল্লা আমার ৪ বছরের ছোট। ফলে আমার জন্ম ১৯৫৭ সালে হলে গাউসের জন্ম ১৯৫২ সালে হয় কিভাবে। তবে সে মুক্তিযুদ্ধা কিনা এটা আমি বলতে পারবোনা বলে জানান। যার কারনে বিষয়টি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধা গাউস মোল্লা জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে তার প্রকৃত জন্ম তারিখ ছিল ১৯৫২ সালের পহেলা জানুয়ারী। যার সব প্রমান তার রয়েছে। কিন্তু আর্থিক ভাবে অসচ্ছল হওয়ায় ব্যাংকে চাকুরি করার প্রয়োজনে বয়স কমিয়ে ১৯৬৩ সালের পহেলা জানুয়ারী করেছিলেন। যা পরবর্তীতে আর ঠিক করা হয়নি। তাছাড়া একজন মুক্তিযুদ্ধা হিসেবে লাল মুক্তিবার্তাসহ সকল কাগজপত্র রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তেরখাদা উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার চৌধুরী আবুল খায়ের জানান, গাউস মোল্লা মুক্তিযুদ্ধার সঠিক প্রমান দেখাতে পারলে মুক্তিযুদ্ধা হবেন, আর দেখানে না পারলে মুক্তিযুদ্ধার তালিকা থেকে বাদ যাবেন। অপরদিকে এলাকাবাসীর দাবী তিনি মুক্তিযুদ্ধার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে হিন্দু পরিবারসহ বিভিন্ন মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান,এটা একটি স্পর্শকাতর বিষয়। যার কারনে বিধি সম্মতভাবে সঠিকতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।