সংসদে পাস হওয়ার অপেক্ষায় থাকা গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ থাকায় আইনটি তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সাংবাদিকদের একটি সভার ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘সস্প্রচার সাংবাদিকতা সুরক্ষা প্রতিবেদন ২০২৩’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী একথা জানান। ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসি আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটকোর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. এজেএম শফিউল আলম ভূঁইয়া। বক্তব্য রাখেন বিজেসির ট্রাস্টি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, নূর সাফা জুলহাজ, সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ। এতে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন নাগরিক টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক শাহনাজ শারমীন। আইনমন্ত্রী বলেন, এমন কোন আইন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। যেটা সংবিধানে মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে সেগুলোর পরিপন্থী। সেই কারণে আমি বলবো ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সংবাদ-মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের জন্য করা হয়নি। সম্প্রতি এই মামলায় একজন সাংবাদিককে আসামি করার বিষয়ে মন্ত্রীর মতামত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে এটিকে অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে আপনাদের কিছু কিছু বক্তব্য আছে, আমি বলব না আপত্তি আছে। কারণ যে কথাগুলো বললেন সেগুলো অনায্য না। আইনটার যে আসল উদ্দেশ্য সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়া সেটাই অ্যাড্রেস করার ব্যবস্থা করতে হবে। সে কারণে আমি উদ্যোগ নেবো। সংসদের স্থায়ী কমিটির সঙ্গে তথ্য মন্ত্রণালয়ের যে কমিটি আছে সেই কমিটিকে আমি অনুরোধ করবো, আপনাদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। তার সঙ্গে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদেরও আমন্ত্রণ জানাতে বলবো। সব ভালো মন্দ দেখে গ্রহণযোগ্য একটা গণমাধ্যমকর্মী আইন যেন সংসদে পাস করতে পারি সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বর্তমানে ব্রডকাস্ট জার্নালিজম শিল্পটি অনেক বিকশিত, রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ব্রডকাস্ট কমিশন না থাকায় কর্মীদের নির্দিষ্ট বেতন কাঠোমো নেই। অধিকাংশ আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা নেই। একইসঙ্গে তিনি সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়াকে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেন। অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া বলেন, ২০১৬ সালে সম্প্রচার কমিশন গঠনের খসড়া প্রস্তুত হলেও এখনো পাস না হওয়ায় কোনো অগ্রগতি হয়নি। শাহনাজ শারমীন বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য সেবা সুরক্ষার বিষয়টি বরাবরের মতোই পিছিয়ে। নিয়মিত বেতন না হওয়া, বোনাস না পাওয়া, ইনক্রিমেন্ট না হওয়া এবং বেতন বৈষম্যসহ সব ধরনের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে।