কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই দীর্ঘ তিন বছর পর্যন্ত খাদ্য সংরক্ষণের জন্য খুলনায় নির্মিত হচ্ছে আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার বা স্টিল সাইলো। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে নগরীর দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা সিএসডি’র অভ্যন্তরে ৩৫৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭ দশমিক ৪৪ একর জায়গার উপর এটি নির্মাণাধীন রয়েছে। নির্মাণ সম্পন্ন হলে প্রাকৃতিক দুযোর্গ পরবর্তী সময়ে সমগ্র দেশসহ এই অঞ্চলের মানুষের খাদ্য সংকট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে প্রকল্প এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু হলেও ড্রয়িং, ডিজাইন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন, কনসালটেন্ট নিয়োগসহ নানা কারণে দ্বিতীয় পর্যায়ে মূল সাইলো নির্মাণ কাজে বিলম্বিত হয়। ২০২১ সালের ২৮ মার্চ গম সংরক্ষণে সাইলো নির্মাণ কাজের উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। সকল প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর ২০২২ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৪২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। ‘জেরিকো ফ্রান্স’ নামে ফ্রান্সের একটি বেসরকারি কোম্পানি অত্যাধুনিক এ স্টিল সাইলোটির ডিজাইনার ও মূলত তারাই কনসালটেন্ট হিসেবে কাজটির তদারকি করছে। নাগরিক নেতা নুর হোসেন জনি বলেন, এই সাইলো নির্মাণে কেবল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষই উপকৃত হবে না, বরং দেশে যে কোনো বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে খাদ্য সংকট কাটিয়ে তুলতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। প্রকল্পের তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মাজেদুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে ৪২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইনশাআল্লাহ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে। গম সংরক্ষণের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে। সাইলোটিতে ১২ হাজার ৭শ’ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ৬টি ঢোলাকৃতি বিন থাকবে। সে হিসেবে ৭৬ হাজার ২শ’ মেট্রিক টন লুজ গম সংরক্ষণ করা যাবে। কেমিক্যাল ছাড়া এখানে তিন বছর পর্যন্ত গম রাখা যাবে । তিনি আরো জানান, দেশের আটটি অঞ্চলে এ জাতীয় ৮ টি আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার বা স্টিলের সাইলো নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে ৬ টি চালের স্টিল সাইলো, বাকী ২ টা গমের স্টিল সাইলো। খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো: তাজুল ইসলাম বলেন, খাদ্য সংরক্ষণের আধুনিক পদ্ধতি সাইলো। প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে যেন দেশে খাদ্য সংকট না হয় সে কারণে আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা হচ্ছে। খুলনাতে একটি সাইলো খুব জরুরী ছিল। এটির কাজ সম্পন্ন হলে সমগ্র দেশসহ এই অঞ্চলের মানুষের কল্যানে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখবে। তিনি আরও বলেন, নদী, সড়ক বা রেলপথে গম আসলে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে অটোমেশনে সংরক্ষণাগারে এসে মজুদ হবে। এরপর লুজ গম অটো প্যাকেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে সংরক্ষণাগার থেকে বিভিন্ন জেলায় বিতরণ করা যাবে।