রাজশাহীতে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের দিনে প্রবেশনে মুক্তি পেয়েছে ২৩ শিশু। রাজশাহীর নারী ও শিশু আদালতের বিভিন্ন মামলার আসামি তারা। ১৪ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার দুপুরে মুক্তি পাওয়া শিশুদের পলাশ ফুল দিয়ে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা জানান আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত রাজশাহীতে শিশু আইনে হওয়া মামলার মধ্যে ৪টি মাদক ও ১৬টি মারামারির মামলায় আসামি হয় ২৩ শিশু। প্রথমবারের মতো অপরাধী হওয়ায় নারী ও শিশু দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান প্রবেশনে তাদের মুক্তি দেন।
বেশ কয়েকটি শর্তে নিজ বাড়িতে জেলা প্রবেশন কর্মকর্তার তদারকে থাকবে তারা। মুক্তি পাওয়ার পর তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা মতিনুর রহমান, পেশকার হেমন্ত বর্মণ ও সাঁটলিপিকার আবু সালেহ।
প্রবেশন কর্মকর্তা মতিনুর রহমান বলেন, মামলার প্রকৃতি অনুযায়ী শর্তগুলো আরোপ করা হবে। এ ছাড়া সাধারণ কিছু শর্ত থাকবে। যেমন শিশুরা মাদকে জড়াতে পারবে না, বাল্যবিবাহ করতে পারবে না, মা-বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে পারবে না, কোনো মারামারিতে জড়াতে পারবে না।
মতিনুর রহমান আরও বলেন, এসব শিশুর পরিবারের কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে। কনফারেন্সের সময় মামলার বাদীরাও উপস্থিত থাকবেন। দুই মাসের মাথায় আদালতে প্রথম প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। দুই মাস পরপর একটি করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে। ছয় মাসে মোট তিনটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি নাসরিন আখতার মিতা বলেন, রায় ঘোষণার সময় আদালতে ২০ শিশু উপস্থিত ছিল। বাকি তিনজনের পক্ষে সময়ের আবেদন করা হয়েছিল। পরে তাদের সবার মুক্তি দেন আদালত। বিচারক রায়ে তাঁর পর্যবেক্ষণে ভালোবাসার নানা দিক তুলে ধরে পরিবার, দেশ ও গুণীজনদের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে জাতির কল্যাণে শিশুদের আত্মনিয়োগে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন।
এদিকে, বিকল্প পন্থায় সংশোধনের সুযোগ পেয়ে খুশি এই ২৩ শিশুর অভিভাবকেরা। গেল বছর একই আদালত একই নিয়মে আরও ৩৭ শিশুকে মুক্তি দিয়েছিলেন।