জিততে শেষ দুই বলে খুলনা টাইগার্সের দরকার ৮ রান। পঞ্চম বলে মোসাদ্দেক সৈকতকে ডিপ মিড উইকেটে ঠেলে ২ রান নেন খুলনার অধিনায়ক ইয়াসির আলি রাব্বি। শেষ বলে সমীকরণ দাঁড়ায় ৬ রানের। টি-২০ ক্রিকেটে হরহামেশাই ছক্কা হাঁকাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। তার ওপর শেষ বলে ছক্কা হলে আসরের তৃতীয় জয় পাবে খুলনা- এমন সমীকরণে লাক্কাতুরা চা বাগান লাগোয়া সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তখন টানটান উত্তেজনা। ইমরুল কায়েশসহ সতীর্থরা ঘিরে ধরেন বোলার মোসাদ্দেক সৈকতকে। ফিল্ডিং সাজানোর বিষয়েও কথা বলেন। শেষ বলের নার্ভ ঠিক রাখতে ইয়াসির কথা বলছিলেন সতীর্থ ওয়াহাব রিয়াজের সঙ্গে। কিন্তু পারেননি ইয়াসির। রাউন্ড দ্য উইকেটে মোসাদ্দেকের আর্ম বলে সিঙ্গেলের বেশি নিতে পারেনি খুলনার অধিনায়ক। কাছে এসেও রোমাঞ্চে ভরা ম্যাচটি খুলনা টাইগার্স হেরে যায় ৪ রানে। বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ৮ ম্যাচে এটা ৫ম জয়। খুলনার ৭ ম্যাচে ৫ নম্বর হার। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে ৪৭ বলে ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন কুমিল্লার পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। আরেক ওপেনার লিটন দাস ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজের। ৪২ বলে ৯ চারে খেলেন ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস।
আগের দিন ব্যাটারদের রান করতে কষ্ট হয়েছে সিলেটের উইকেটে। একস্ট্রা বাউন্স ছিল। গতকাল উইকেট ছিল অনেকটাই ব্যাটিং সহায়ক। টস জিতে খুলনার অধিনায়ক আমন্ত্রণ জানায় কুমিল্লাকে ব্যাটিংয়ে। গত আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার দুই ওপেনার লিটন ও রিজওয়ান ৯.৫ ওভারে ৬৫ রানের ভিত দেন। পরের ১০ ওভারে ইমরুল বাহিনী যোগ করে ১০০ রান। লিটন ৪২ বলে ৫০ রান করে সাজঘরে ফেরেন। দ্বিতীয় জুটিতে রিজওয়ান ও জনসন চার্লস যোগ করেন ৩৮ বলে ৬০ রান। ক্যারিবীয় ক্রিকেটার চার্লস ৩৯ রানের ইনিংসটি খেলেন মাত্র ২২ বলে ৫ ছক্কায়। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই কুমিল্লা ২ উইকেটে ১৬৫ রান করে। ম্যাচসেরা রিজওয়ানের ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও একটি ছক্কা। শেষ দিকে খুশদিল শাহ ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন ১১ বলের খরচে।
টার্গেট ১৬৬ রান। ওভার প্রতি ৮.৩। খুব বেশি না হলেও কম নয়। খুলনার দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এন্ড্রু বালবার্নি ১৪ রান যোগ করেন ২.৩ ওভারে। তামিম লেগ বিফোর হন পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার নাসিম শাহের ফুলটসে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে বালবার্নি ও ক্যারিবীয় ক্রিকেটার শাই হোপ চেষ্টা করেন রানের গতি বাড়াতে। কিন্তু কুমিল্লার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে খুব বেশি এগোতে পারেনি। বালবার্নি ৩৮ রান করেন ৩১ বলে। হোপকে ব্যক্তিগত ৩১ রানে দুর্দান্ত ইয়র্কারে বোল্ড করেন নাসিম। মাহামুদুল হাসান জয় ১৩ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ জমানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ৩ বলের ব্যবধানে জয় ও আজম খান সাজঘরে ফিরলে ফের চাপে পড়ে যায় খুলনা। সেখান থেকে বেরোতে পারেনি। যদিও শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৭ রান। প্রথম দুই বলে এক রান তুলে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ইয়াসির বাহিনী। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে দুই চারে আবার জমিয়ে তুলেন ম্যাচ। কিন্তু শেষ দুই বলে ৮ রান নিতে ব্যর্থ হয়ে ম্যাচ হেরে যায় ৪ রানে।
###