বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংসদে জানিয়েছেন, দেশে মজুদকৃত গ্যাস দিয়ে প্রায় ১১ বছর বাংলাদেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত দেশে মজুদ গ্যাসের পরিমাণ ৯ দশমিক শুন্য ৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। এছাড়া চলতি বছরের জুন মাসে ভারত থেকে পাইপ লাইনে বাংলাদেশে ডিজেল আমদানির কমিশনিং কাজ কর্ম শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
স্পিকার ড শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে সোমবারের বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী ও এম আবদুল লতিফের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।
নুরুন্নবী চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের নসরুল হামিদ বলেন, সর্বশেষ গত বছরের ১ জুলাই প্রাক্কলন অনুযায়ী দেশে মোট উত্তোলনযোগ্য প্রমাণিত ও সম্ভাব্য মজুদ (২পি) ২৮ দশমিক ৫৯ টিসিএফ। শুরু হতে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ক্রমপুঞ্জিত গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ১৯ দশমিক ৫৩ টিসিএফ। সে হিসাবে ২০২২ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত উত্তোলনযোগ্য অবশিষ্ট মজুদের (২পি) পরিমাণ ৯ দশমিক ৬ টিসিএফ। দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে দৈনিক গড়ে প্রায় ২ হাজার ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে। সে হিসাবে অবশিষ্ট মজুদকৃত গ্যাস দ্বারা প্রায় ১১ বছর বাংলাদেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। তবে নতুন গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
সরকারি দলের সদস্য এম. আব্দুল লতিফের লিখিত প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, চলতি বছর জুন মাস নাগাদ পাইপ লাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানির কার্যক্রম শুরু হবে।
এ সময় তিনি আরো জানান, ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) হতে ২০১৬ পঞ্জিকা বর্ষ থেকে রেল ওয়াগনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে পাইপ লাইনের মাধ্যমে ভারত হতে ডিজেল আমদানির লক্ষ্যে প্রায় ১৩১ দশমিক ৫ কিলোমিটার (বাংলাদেশ অংশে ১২৬.৫ কিলোমিটার এবং ভারত অংশে ৫.০ কিলোমিটার) দীর্ঘ ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (অঅইবিএফপিএল) নির্মাণ করা হয়েছে। এই পাইপ-লাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানির জন্য প্রি- কমিশনিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চলতি বছর জুন মাস নাগাদ এই পাইপ লাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানির কমিশনিং কার্যক্রম তথা পরীক্ষামূলকভাবে ডিজেল আমদানি শুরু হবে বলে আশা করা যায়।
জাতীয় পার্টির এমপি শামীম হায়দার পাটোয়ারীর এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ২০২১-২২ অর্থ বছরে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল প্রায় ১৪ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে দেশে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদার পরিমাণ বেড়ে প্রায় ১৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটে দাঁড়াবে।
তিনি জানান, বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উদপাদন ক্ষমতা ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। তার মধ্যে আমদানিসহ গ্রিড ভিত্তিক বিদ্যুৎ ভিত্তিক উৎপাদন ক্ষমতা ২৩ হাজার ৪৮২ মেগাওয়াট, ক্যাপটিভ ২ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট এবং অফগ্রিড নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ ৪১৮ মেগাওয়াট। তবে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট বলে জাানন প্রতিমন্ত্রী। তবে পরিকল্পণা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার কাজ করছে।
###