গোপালগঞ্জে আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা দিদার হত্যার ঘটনায় ১শ ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও ১হাজার ৫শ জন কে অজ্ঞাত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭সেপ্টেম্বর) নিহত কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদারের স্ত্রী রাবেয়া রহমান বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর- গোপালগঞ্জ জিআর-২৪ তারিখ ১৭সেপ্টম্বর ২০২৪ ইং।
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। পুলিশের ওই কর্মকর্তা মানবজমিন কে জানান, এই হত্যা মামলায় উল্লেখিত আসামিদের কয়েকজনকে পূর্বেই ৫৪ধারায় আটক করা হয়েছিল। বাকিদের গ্ৰেফতার করতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এর পূর্বে বিএনপির গাড়িবহরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্দয় ও কাপুরুষোচিত হামলা, ভাংচুর ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা শওকত আলী দিদারকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ১৪ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গোপালগঞ্জ জেলায় এ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এছাড়াও মর্মান্তিক হত্যা ও হামলার ঘটনায় ওইদিনই গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী তার নিজ বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মা-বাবার কবর জিয়ারত করতে যাচ্ছিলেন। এছাড়াও ঐদিন কেন্দ্রীয় এ নেতাকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা বিএনপির ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ছিল। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতির টুঙ্গিপাড়ায় আগমন উপলক্ষ্যে জেলা শহরের ঘোনাপাড়া এলাকায় পথসভার আয়োজন করেন স্থানীয় বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা শহরের বেদগ্রাম এলাকায় পথসভা শেষে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে গাড়িবহর নিয়ে ঘোনাপাড়া উদ্দেশ্যে রওনা হন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। গাড়িবহর টি ঘোনাপাড়ায় পৌঁছালে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন ছেড়ার অভিযোগ তুলে তাদের ওপর হামলা চালান।
এসময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও তার স্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্না, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সবুজসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন।
পরে রাত ৮টার দিকে ঘোনাপাড়ার পাশে চরপাথালিয়া গ্ৰামের বাংলালিংক টাওয়ার এর কাছে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদারকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের দাবি আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে সড়কের পাশে ফেলে রেখেছিল।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা আরো জানান, গাড়িবহর টিতে এস এম জিলানীর সাথে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমুজ্জামান সেলিম উপস্থিত থাকলেও তার গাড়িটি পিছনে থাকায় তিনি আহত হননি।