কাতারের দোহা থেকে বুয়েনোস আইরেস। দীর্ঘ ২১ ঘণ্টা যাত্রা করে সোমবার ভোররাতে ফিরেছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা দল। অতিরিক্ত ভিড়ে ভেস্তে গেল হুডখোলা বাসে আর্জেন্টিনার বিজয় মিছিল।
বুয়েনস আইরেসের হুডখোলা বাস থেকে হেলিকপ্টারে করে লিওনেল মেসিদের উদ্ধার করা হল। তারপর তাদের উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আর্জেন্টিনার বিজয় মিছিলের সময় কয়েকজন সমর্থক বাসে ঝাঁপানোর চেষ্টা করেছিলেন।
আইরেসে হুডখোলা বাসে বিজয় মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। ৩৬ বছর পর দেশকে বিশ্বকাপ জেতানোর তারকাদের সামনে থেকে দেখতে এবং তাদের অভ্যর্থনা জানাতে বুয়েনস আইরেসের রাস্তায় জনসমুদ্র নেমেছিল।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একাধিক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে দাবি করা হয়েছে যে মেসিদের দেখেতে ৪০ লাখের বেশি মানুষ জমায়েত করেছিলেন। তার জেরে পুরোপুরি রুদ্ধ হয়ে যায় আর্জেন্টিনার রাজধানী। যতদূর চোখ যাচ্ছিল, ততদূর শুধু মানুষ। পরিস্থিতি এমনই হয় যে পরিকল্পনা মতো মেসিদের বাস সেন্ট্রাল ওবেলিসকো সৌধে পৌঁছাতে পারেনি।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে যে একটি ব্রিজের তলা দিয়ে যখন মেসিদের বাস যাচ্ছিল, তখন কয়েকজন সমর্থক বাসে ঝাঁপিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন। সুরক্ষাজনিত কারণে মেসিদের বিজয় মিছিল কাটছাঁট করে দেওয়া হয়। আট ঘণ্টার বিজয় মিছিলের পরিকল্পনা থাকলেও কোনও ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। হুডখোলা বাস থেকে মেসি, ডি’মারিয়া, মার্টিনেজদের হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়। হেলিকপ্টারেই তড়িঘড়ি বিজয় মিছিলের আয়োজন করে প্রশাসন।
বিষয়টি নিয়ে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতির মুখপাত্র গ্যাব্রিয়েলা সেরুতি বলেন, বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা পুরো রুটের উপর দিয়ে হেলিকপ্টারে করে উড়ে যাচ্ছেন। কারণ আনন্দের বিস্ফোরণের জন্য রাস্তায় বিজয় মিছিল করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। টেলিভিশনের ছবিতে দেখা গিয়েছে যে পুরো রাস্তায় ভক্তরা অধীর আগ্রহে দাঁড়িয়ে আছেন। নিজেদের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে অপেক্ষা করছেন।
কিন্তু বাসের মিছিলের পরিবর্তে হেলিকপ্টারে মেসিদের উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ায় অনেকেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধারও ছবি সামনে এসেছে। তারইমধ্যে মেসিদের অভ্যর্থনা জানাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এক সমর্থক বলেন, এটা অবিশ্বাস্য। এটা অভাবনীয়। আমার জীবনে এর থেকে ভালো কিছু হতে পারে। মানুষ এত আনন্দ করছেন দেখে মন ভরে যাচ্ছে। সকলে মিলে, সকলের সঙ্গে, একে অপরের হাত ধরে, একে অপরকে জড়িয়ে ধরে, একে অপরকে চুমু খেয়ে আর্জেন্টিনার জয় উদযাপন করছেন। আজ আমরা সবাই এক।
তার আগে আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়ো তাপিয়া টুইট করে লেখেন, ওবেলিস্কে গিয়ে সবাইকে অভিবাদন জানানো হয়তো সম্ভব হবে না। নিরাপত্তারক্ষীরা আমাদের এগোতে দিচ্ছেন না। সমস্ত ফুটবলারের প্রতিনিধি হিসাবে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
বিজয় মিছিল শেষ হতেই অনেক ফুটবলারই নিজ নিজ ঠিকানায় রওনা দেন। যেমন অধিনায়ক লিওনেল মেসি ও অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া রওনা হন রোসাসিওর উদ্দেশে। নিজের শহর রোসারিওতেও পৌঁছন মেসি। সেখানে সমর্থকদের সঙ্গে দেখা যায় তাঁকে। অনেকের সঙ্গে ছবিও তোলেন। এর মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলারও।