মহাকাব্যের রাত বুঝি একেই বলে। এভাবেই বুঝি খুলতে হয় রহস্য ঘেরা আরব্য রজনীর দুয়ার। প্রতিবন্ধকতার সহস্র উত্তাল ঢেউ ভেঙে এভাবেই বুঝি সিন্দাবাদের এগিয়ে যেতে হয়। এমনটাই করেন মনে হয় আধুনিয়ক গ্লাডিয়েটর।
অর্ধেক নয় পুরো বিশ্বই জয় করেছেন লিওনেল মেসি। নিজের লেখা মহাকাব্যে তিনিই মহানায়ক। এই গল্পের পরতে পরতে কেবল তারই পদাঙ্ক। মেসি কেবল নিজের ক্যারিশমা দেখাননি।
দেখিয়েছেন কেমন করে জমে থাকা বারুদ ঘষে জ্বালাতে হয় আগুন।
তরুণ এনজো ফার্নান্দেজ হয়েছেন সেরা উদীয়মান ফুটবলার। আলভারেজও করেছেন গোলের পর গোল। আর তার সবকিছুতেই জুড়ে ছিলেন মেসি।
ভেঙে পড়া দলকে তিনি যেমন জীয়ন কাঠির ছোঁয়ায় জীবিত করেছেন। তেমন সতীর্থদের দিয়েছেন যোগ্য সঙ্গ। গোল পোস্টের কাছে গিয়ে মেসি সতীর্থর দিকে বলটা এগিয়ে দিতে একটুও দ্বিধা করেননি।
আর পুরো বিশ্বকাপই তিনি খেলেছেন অঙ্ক কষে কষে। যখন যেটুকু দৌড়াতে হয়, তখন সেটুকু দৌড়েছেন।
যখন হাঁটার তিনি হেঁটেছেন। তিনি বুঝিয়েছেন দৌড়ে উসাইন বোল্ট হওয়াই শেষ কথা নয়, দৌড়টা কতোটা কাজে লাগলো সেটাই বড় কথা।
ফিফার গতি ট্র্যাকিং বলছিল হেঁটে হেঁটেই বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছেছেন মেসি। মানে তার গতি ছিল অনান্যদের চেয়ে কম। তবে ফাইনাল ম্যাচে কিন্তু ঠিকঠাকই দৌড়েছেন মেসি। যখন যেখানে দরকার, তখন সেখানেই তাকে পাওয়া গেছে। মেসির নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশই নেই।
মহাকাব্যিক পথে তিনি হেঁটেছেন মহানায়রকের মতো। ট্রয় যুদ্ধের ময়দানে তিনি ক্ষিপ্র থাকলেও মাথা রেখেছেন শান্ত। উগ্রতার বসে কোথাও কোনো ভুল মেসি করেননি। তার মহাকাব্যে যেমন দক্ষতা আছে, তেমন আছে বিচক্ষণতাও।
নির্ভুল চালে যুদ্ধ জয় করা মেসিকে দেখে মহাকাব্যও হয়তো মুগ্ধ হয়ে গেছে। মেসিকে কাছ থেকে দেখে হয় বিমোহিত হয়েছে স্বয়ং বিশ্বকাপও।
নবচেতনা / এমএআর