উৎসবের জন্য প্রস্তুত কাতারের লুসাইল স্টেডিয়াম। কিন্তু শেষমেশ কারা উৎসবে মেতে উঠবে— আর্জেন্টিনা, নাকি ফ্রান্স! ২২তম ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনালে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আজ রাত ৯টায় মুখোমুখি আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। ৩৬ বছর পর আরও একবার শিরোপখরা কাটানোর সুযোগ আলবিসেলেস্তেদের সামনে।
কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জিতেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর টানা ৩৬টি বছর আর বিশ্বকাপ জিততে পারেনি তারা। মাঝে একবার সুযোগ এসেছিল মেসিদের সামনে। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপের ফাইনালে ১-০ গোলে হেরে সেবার হূদয় ভাঙে আর্জেন্টিনা ভক্তদের। হাতছাড়া হয়ে যায় বিশ্বকাপের শিরোপা।
আজ মেসিদের সামনে আবারও সুযোগ এসেছে। বেশ ছন্দেও আছে স্কালোনির দলটি। ছন্দে আছেন দলের সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসিও। অন্যদিকে ৬০ বছরের পুরোনো স্মৃতির পুনরাবৃত্তি ঘটানোর সুযোগ এসেছে ফ্রান্সের সামনে। ১৯৬২ সালে টানা দুবার বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তি গড়েছিল ব্রাজিল।
এর আগে এই কীর্তি গড়েছিল ইতালি। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে টানা দুই শিরোপা জেতে ইতালি। এবার সেই কীর্তি গড়ার দারুণ সুযোগ রয়েছে ফরাসিদের সামনে। তবে লড়াইটা যে হবে দুই সতীর্থের মধ্যে। দু্ই দলের দুই তারকা খেলোয়াড় এমবাপ্পে ও মেসি একই ক্লাবে খেলেন। প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের হয়ে খেলেন এ দুই তারকা। গোল্ডেন বুট নিয়েও দুজনের মধ্যে যুদ্ধটা জমেছে বেশ। এ বিশ্বকাপে দুজনের গোলসংখ্যাই সমান পাঁচটি করে। তাই শুধু শিরোপা নয়, লড়াইটা হবে দুই ক্লাব সতীর্থের মধ্যেও।
এদিকে ষষ্ঠবারের মতো ফাইনাল খেলবে আর্জেন্টিনা। আর ফ্রান্স খেলবে চতুর্থবারের মতো। দু’দলই এর আগে শিরোপা জিতেছে সমান দুবার করে। তবে তৃতীয় শিরোপাটি যাবে কার ঘরে? ফ্রান্স জিতলে তাদের টানা দ্বিতীয় শিরোপা হবে এটি। সব মিলিয়ে তৃতীয় শিরোপা। গত আসরেই দ্বিতীয় শিরোপা তারা ঘরে তুলেছে।
এর আগে ফ্রান্স প্রথম শিরোপার দেখা পেয়েছিল ১৯৯৮ সালে। সেই ফাইনালের সঙ্গে কাকতালীয়ভাবে মিলে যাচ্ছে আজকের ফাইনাল ম্যাচও। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল ফ্রান্স। জোড়া গোল করেছিলেন ফ্রান্সের ডিফেন্ডার লিলিয়ান থুরাম।
২০ বছর পর ২০১৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে যায় ফ্রান্স। সেমিফাইনালে ফ্রান্সের হয়ে গোলটি করেছিলেন ডিফেন্ডার স্যামুয়েল উমতিতি। সেবারও ফ্রান্সই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এবারও ঠিক তা-ই হয়েছে। কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মরক্কোর বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতেছে ফ্রান্স।
পাঁচ মিনিটে ফ্রান্সকে প্রথম গোলটি এনে দেন ডিফেন্ডার থিও হার্নান্দেজ। আগে যে দুটি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ডিফেন্ডাররা ফ্রান্সকে গোল এনে দিয়েছেন, প্রতিবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফ্রান্স। এবারও যেহেতু সেমিফাইনালে ডিফেন্ডার গোল করেছেন, ফ্রান্স তাই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা করতেই পারে।
তবে ফাইনালের আগে ফরাসি শিবিরে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। ফ্রান্স দলে দেখা দিয়েছে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। যার ফলে বিশ্বকাপ ফাইনালে দলটির নিয়মিত সেন্টার ব্যাক জুটিকে পাওয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা। ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারান ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বকাপ ফাইনালের ঠিক আগেই। তার শরীরে দেখা দিয়েছে বেশ কিছু উপসর্গ।
এদিকে আরেক ডিফেন্ডার ইব্রাহিমা কোনাতে অসুস্থ হয়ে নিজের কক্ষ ছেড়েই বের হতে পারেননি। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মরক্কোর বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। আরেক ডিফেন্ডার ডায়ট উপামেকানো আর মিডফিল্ডার আদ্রিয়েন রাবিওকে সেই ম্যাচে মাঠে নামাতে পারেনি ফ্রান্স।
এবার কোনাতেও যোগ দিলেন সেই দলে। কোচ দিদিয়ের দেশম জানিয়েছেন, স্কোয়াডে ভাইরাসটির ছড়িয়ে যাওয়া রুখতে সতর্কতা অবলম্বন করছে ফরাসিরা। এমন অসুস্থতার কারণও খুঁজে বের করেছেন ফরাসি কোচ।
ইএসপিএনের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, রাবিও আর উপামেকানো সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনালে তাদের দেখাও যেতে পারে।
আর্জেন্টিনা জিতলে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ যাবে মেসিদের ঘরে। আলবিসেলেস্তারা শেষবার ট্রফি পেয়েছিল ১৯৮৬ সালে। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতবেন মেসি। একইসঙ্গে স্পর্শ করবেন আর্জেন্টিনার অপর দুই বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ড্যানিয়েল পাসারেল্লা ও দিয়েগো ম্যারাডোনাকে। চতুর্থ দল হিসেবে তিন বা তারও বেশি বিশ্বকাপ জেতার নজির তৈরি করবে তারা। সবচেয়ে বেশি পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ব্রাজিল। জার্মানি ও ইতালি জিতেছে চারবার।
এদিকে ২০০২-এ ব্রাজিলের পর চারটি বিশ্বকাপ জিতেছে ইউরোপের দেশ। আর্জেন্টিনা এই ম্যাচ জিতলে ২০০২ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের পর লাতিন আমেরিকার প্রথম দল হিসেবে ইউরোপীয় দলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জেতার নজির তৈরি করবে।
মেসি যদি গোল করেন এবং এমবাপ্পে গোল না পান বা জুলিয়ান আলভারেজ ও অলিভিয়ের জিরুদ একটির বেশি গোল না করেন, তাহলে সোনার বুট পাবেন মেসি। প্রতিযোগিতার সেরা ফুটবলার হওয়ার জন্য সোনার বলও পেতে পারেন তিনি। ২০১৪ সালেও এই পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। প্রথম ফুটবলার হিসেবে এ পুরস্কার দুবার জিতবেন তিনি।
এদিকে বিশ্বমঞ্চে এখন পর্যন্ত তিনবার মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। দুই দলের তিনবারের দেখায় দুবারই জিতেছে আর্জেন্টিনা। ফ্রান্স জিতেছে একটিতে; তাও আবার সর্বশেষ বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে। সব মিলিয়ে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হয়েছে ১২ বার। এখানেও এগিয়ে রয়েছে আকাশি-সাদা জার্সিধারীরা। ১২ বারের দেখায় আর্জেন্টিনার জয় ছয়টি। ফ্রান্স জিতেছে তিন ম্যাচ। বাকি তিনটি ড্র।
এদিকে চলতি বিশ্বকাপে এখন অবধি বিপক্ষের জালে আর্জেন্টিনা বল জড়িয়েছে ১২ বার। এক আসরে তাদের সর্বোচ্চ গোল ১৪টি। এটি আসে ১৯৮৬ সালে সর্বশেষ বিশ্বজয়ী আসরে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে টানা ৩৬ ম্যাচ জয়ের পর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হারে আর্জেন্টিনা।
এরপর আবার জয়টাকে অভ্যাস করে নেয়। সব মিলিয়ে সর্বশেষ ৪২ ম্যাচে একটিই হার তাদের। জিতেছে ২৯ ম্যাচ, ড্র ১২টি। চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত পাঁচটি করে গোল করেছেন লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। গত আসরে এমবাপ্পের গোল ছিল চারটি। বিশ্বকাপে দুই আসরে ১৩ ম্যাচ খেলে এমবাপ্পের গোলসংখ্যা ৯টি।
অন্যদিকে পাঁচ বিশ্বকাপে ২৫ ম্যাচ খেলা মেসির গোলসংখ্যা ১১টি। ফাইনালে এক গোল করলে বসবেন কিংবদন্তি পেলের পাশে। ফাইনালে মাঠে নামলে মেসি হবেন এককভাবে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা তারকা। জার্মান কিংবদন্তি লোথার ম্যাথিউসের সঙ্গে যৌথভাব শীর্ষে আছেন মেসি। এ পর্যন্ত দুজনেই খেলেছেন ২৫টি করে ম্যাচ। ২৫ ম্যাচে মেসির গোল ১১, যা কি-না আর্জেন্টাইন কোনো খেলোয়াড়ের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোল। ফ্রান্স অধিনায়ক ও গোলরক্ষক হুগো লরিসের সামনে রয়েছে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাবনা।
২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে ফরাসিরা শিরোপা জিতেছিল তার নেতৃত্বেই। এ ছাড়া ফাইনালে নামলেই বিশ্বকাপে গোলরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা এককভাবে লরিসের হয়ে যাবে। এখন যৌথভাবে শীর্ষে আছেন জার্মান গোলরক্ষক মানুয়েল নয়্যারের সঙ্গে। দুজনই খেলেছেন ১৯ ম্যাচ।
এদিকে এস্তাদিও অ্যাজটেকা— যা আর্জেন্টািইন সমর্থকদের কাছে ভালোবাসার এক নাম। মেক্সিকো সিটির এই স্টেডিয়ামে সোনার ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। দোহার লুসাইল স্টেডিয়াম ১৯৮৬ বিশ্বকাপের ফাইনালের ভেন্যু এস্তাদিও অ্যাজটেকার নাম সামনে নিয়ে এসেছে। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শুরুটা ১৯৯০ বিশ্বকাপের মতো। সেবার নিজেদের প্রথম ম্যাচে ক্যামেরুনের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল আলবিসেলেস্তেরা। এ বিশ্বকাপেও সৌদি আরবের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করে আকাশি-সাদারা। লুসাইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার খেলার সঙ্গে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের অ্যাজটেকারও সাদৃশ্য রয়েছে।
এই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস, সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়া এবং ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা খেলবে লুসাইল স্টেডিয়ামে। ঠিক ১৯৮৬ বিশ্বকাপে অ্যাজটেকায় কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড, সেমিতে বেলজিয়াম এবং ফাইনালে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে খেলেছিল আর্জেন্টিনা। লুসাইলকে একরকম হোম ভেন্যু বানিয়ে ফেলেছে আর্জেন্টিনা।
বিশ্বকাপে এই মাঠে হচ্ছে ১০ ম্যাচ। যার পাঁচটিতেই জড়িয়ে আছে আর্জেন্টিনার নাম। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বে অ্যাজটেকায় আর্জেন্টিনার ম্যাচ ছিল না। থাকলে হয়তো ম্যাচসংখ্যায়ও অ্যাজটেকা-লুসাইল সমান হয়ে যেত। এই বিশ্বকাপে নিজেদের সাত ম্যাচের পাঁচটিতেই লুসাইলে খেলবেন মেসিরা। এই মাঠকে যেন দুর্গ বানিয়ে নিয়েছেন তারা। এটি যেন তাদের বুয়েন্স এইরেসের এস্তাদিও মনুমেন্টাল। তবে ফ্রান্স অবশ্য এ মাঠে একবারও খেলতে পারেনি। ফাইনালের জার্সিতেও এবার ১৯৮৬ বিশ্বকাপকে পাচ্ছে আর্জেন্টিনা। ফ্রান্সের বিপক্ষে সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করা হোম জার্সি পরেই খেলবে তারা।
১৯৯০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে অ্যাওয়ে জার্সি পরে খেলে হেরেছিল দুবারের বিশ্বচাম্পিয়নরা। দুবারই হেরে যাওয়ায় এই জার্সিকে সমর্থকরা ‘অপয়া’ মনে করেন। ফ্রান্স-আর্জেন্টিনার জার্সির রঙ ভিন্ন হওয়ায় এবার অ্যাওয়ে জার্সি পরার প্রয়োজন হচ্ছে না। দুদলের জন্যই হোম জার্সি চূড়ান্ত করেছে ফিফা।
অন্যদিকে আর্জেন্টিনার ডেরায় উঁকি দিচ্ছে সেই ১৯৭৮ সালের মধুর স্মৃতি। সৌদি আরবের কাছে হার দিয়ে এবারের বিশ্বকাপ শুরু করে আর্জেন্টিনা। গ্রুপপর্বে ফ্রান্স হেরেছে তিউনিসিয়ার কাছে। শেষ পর্যন্ত এ দুটি দলই উঠেছে ফাইনালে।
১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপেও এমন ঘটনা ঘটেছিল। ৪৪ বছর আগের সেই বিশ্বকাপেও ফাইনালে ওঠার পথে গ্রুপপর্বে একটি ম্যাচ হেরেছিল আর্জেন্টিনা। ফাইনালের অপর দল নেদারল্যান্ডসও হেরেছিল গ্রুপপর্বে। তারপর এবার প্রথমবারের নজিরটি দেখা গেল ফাইনালে উঠে আসার পথে একটি করে ম্যাচ হেরেছে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স।
অপরাজিত থেকে ফাইনালে উঠে আসতে পারেনি কেউ। আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত ৪৪ বছর আগের সেই বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ইতালির কাছে হেরেছিল স্বাগতিকরা। ৬৭ মিনিটে গোল করেছিলেন ইতালির ফরোয়ার্ড রোবের্তো বেত্তেগা। এবার অবশ্য গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচ নয়, প্রথম ম্যাচে হেরেছেন মেসিরা।
সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হারের পরই ঘুরে দাঁড়ায় আর্জেন্টিনা। দুর্দান্ত খেলে উঠে এসেছে ফাইনালে। তবে ১৯৭৮ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা নেদারল্যান্ডস যেমন গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচটা হেরেছিল, এবার ফ্রান্সও তেমনি গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচটি হেরেছে। সেই বিশ্বকাপে গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-২ গোলে হেরেছিল নেদারল্যান্ডস।
নবচেতনা / এমএআর