ইংলিশদের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন হ্যারি কেইন। সেই হ্যারি কেইনেই স্বপ্নভঙ্গ ইংল্যান্ডের। পেনাল্টি মিস করেছেন ইংলিশ অধিনায়ক। ৫৬ বছরের আক্ষেপ তাতে আরও বাড়ল। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপার পথে আরেকটু এগিয়ে গেল ফ্রান্স। সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ মরক্কো।
আল বায়েত স্টেডিয়ামে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়েছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। ১৬ মিনিটের মাথায় অউরিলিয়ে শুয়েমিনি দূরপাল্লার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ফ্রান্স। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ইংলিশদের সমতায় ফেরান ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইন। ৭৭ মিনিটে ফের ফ্রান্সকে এগিয়ে দেন অলিভিয়ের জিরুদ। সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ডও। কিন্তু পেনাল্টি মিস করেন কেইন।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে ফ্রান্স। দশম দেম্বেলের ক্রসে নিচু হেড করেন অলিভিয়ের জিরুদ। তবে দুর্বল হেড সহজে গ্লাভসবন্দী করেন পিকফোর্ড। ১৪ মিনিটেরে সময় দারুণ এক আক্রমণ থেকে এমবাপ্পে বক্সে বল বাড়ান, তবে দেম্বেলে ঠিকমত পা লাগাতে পারেননি।
১৬তম মিনিটে অবশ্য কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পেয়ে যায় ফ্রান্স। দ্রুত আক্রমণে ওঠা ব্লুরা থ্রি লায়নদের ডিবক্সের বাইরে পাস খেলতে থাকে। একসময় বল পেয়ে আকস্মিক শট নেন শুয়েমিনি। ডি বক্সের অনেক বাইরে থেকে নেয়া শটটি ঠেকানোর চেষ্টা করলেও বলের গতির সঙ্গে পেরে ওঠেননি ইংল্যান্ড গোলরক্ষক পিকফোর্ড।
ফ্রান্সের আক্রমণের জবাবে পাল্টা আক্রমণে ভীতি ছড়াচ্ছিল ইংল্যান্ডও। হ্যারি কেইন-বুকায়ো শাকারা ফ্রান্সের জমাট রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা করে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। বলের দখল ও আক্রমণে ইংলিশরাই এগিয়ে প্রথমার্ধে। ২৫তম মিনিটে বল দখলে নেওয়ার লড়াইয়ে ফ্রান্সের ডিবক্সে পড়ে যান হ্যারি কেইন। ইংলিশরা পেনাল্টির দাবি জানালে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে তা নাকচ করে দেন রেফারি।
২৮ মিনিটে হ্যারি কেইনের দূরপাল্লার শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান ফ্রান্স গোলরক্ষক হুগো লরিস। কর্নার থেকে জটলায় গোলের সম্ভাবনা জাগলেও ক্লিয়ার করে ফ্রান্সের ডিফেন্ডাররা। বড় ম্যাচে দুদলই রক্ষণ সামলে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করেছে। মাঝে মাঝে দূরপাল্লার শটে পরীক্ষা নিয়েছে বিপক্ষের গোলরক্ষকের। ৪৬ মিনিটে লুক শর পাস থেকে বেলিংহ্যামের দূরপাল্লার শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান লরিস। কর্নার থেকে দারুণ সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু বলে পা ছোঁয়ানোর আগেই ধরে ফেলেন লরিস। প্রথমার্ধে ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় ফ্রান্স।
৬৯ মিনিটে দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন ম্যাগুয়ের। ফ্রিকিক থেকে ডিবক্সে ভেসে আসা বলে হেড নিয়েছিলেন এই ইংলিশ ডিফেন্ডার। তবে অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে সাইডপোস্টের পাশ দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৭১ মিনিটে সুযোগ নষ্ট করেন শাকা। ফ্রান্সের ডি বক্সে ক্রস করেছিলেন লুক শ। শাকা পা লাগালেও তা লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
৭৪ মিনিটে হার্নান্দেজের বাড়ানো বল থেকে জিরুদের হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৭৬ মিনিটে জিরুদের হাফভলি অবিশ্বাস্যভবে ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড। ৭৭ মিনিটে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। আগের দুবার বঞ্চিত হলেও এবার আর জিরুদকে আটকে রাখতে পারেনি ইংলিশরা। হেড থেকে এই বিশ্বকাপে নিজের চতুর্থ গোলটি করেন তিনি।
৮১ মিনিটে নিজেদের ডিবক্সে মাউন্টকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন থিও হার্নান্দেজ। ইংলিশদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভিএআর দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক নেন রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা হ্যারি কেইন। কিন্তু তিনি বল আকাশে পাঠিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন।