বিশ্বকাপে ‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচে গত আসরের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোল শুন্য ড্র করেছে মরক্কো। আজ কাতারের আল-খোরের আল-বায়াত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত গ্রুপে এবং দিনের প্রথত ম্যাচে গোল শুন্য ড্র করেছে দল দুটি। দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপ খেলতে নামা মরক্কোর বিপক্ষে গত আসরের রানার্স আপ ক্রোয়েশিয়া ফেবারিট হিসেবে মাঠে নামলেও নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি।
আবার কাগজে-কলমে শক্তিমত্তার দিক থেকে দুই দলের সামর্থ্য কাছাকাছি হওয়ায় শুরু থেকেই উত্তাপ ছড়াতে থাকে ম্যাচটি। দুই দলই একে অপরের উপর চড়াও হলেও কোন পক্ষই কোন আক্রমনের সফল সমাপ্তি টানতে পারেনি।
ম্যাচের ২০তম মিনিটে আক্রমণে যাওয়া মরক্কোর ডিফেন্ডার আচরাফ হাকিমিকে ক্রোয়েশীয় ডিফেন্ডাররা ফাউল করলে ফ্রি কিক পায় তারা। ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কি কাজে লাগাতে পারেনি আফ্রিকান দলটি।
পরের মিনিটে লুকা মড্রিচের নেতৃত্বে আক্রমণে যায় ক্রোয়েশিয়া। তবে কর্নারের বিনিময়ে সেটি প্রতিহত করে মরক্কোর রক্ষণভাগ। এভাবে আক্রমন ও পাল্টা আক্রমনে ম্যাচটি এগিয়ে গেলেও সেটি সীমাবদ্ধ ছিল মধ্যমাঠে। গোল করার মতো একটি আক্রমনও করতে পারেনি প্রতিদ্বন্দ্বি দল দুটি।
৪৫ মিনিটে ইভান পেরিসিচের দুর্দান্ত এক আক্রমন দক্ষতার সাথে রুখে দেন মরক্কোর গোল রক্ষক ইয়াসিন বুনু। ডি বক্সের বাঁ দিকে চলন্ত বলে পেরিসিচ শট নিলে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটি গোল লাইন থেকে গ্রীবে পুরে নেন গোল রক্ষক। ফলে গোল শূন্য সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় প্রতিদ্বন্দ্বী দল দুটি।
বিরতির পরও ম্যাচের চেহারা ছিল একই রকম। তবে বল দখলের দিক থেকে বর্তমান রানারআপদের চেয়ে এগিয়ে ছিল মরক্কানরা। যদিও প্রথমার্ধের মতো মধ্যমাঠের মধ্যেই সিমাবদ্ধ ছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ৬৩ মিনিটে মরক্কোর সেলিম আমাল্লাহকে ফাউল করেন লুকা মড্রিচ। ফলে ডি বক্সের বাইরে ফ্রি কিক থেকে জোড়ালো শট নেন হাকিমি। তার অসাধারণ শটের বল পোস্টে প্রবেশের সময় ফিস্ট করেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ডোমিনিক লিভাকোভিচ।
৭০ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণ কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করে মরক্কোর রক্ষণ। ৭৯ তম মিনিটে ক্রোয়েশিয়া পেয়েছিল পাল্টা ফ্রি কিক। ফ্রি কিকের ক্রসে মরক্কান গোল পোস্টেও সামনেই হেড করেছিলেন ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডার জোসকো গাভারডিওল। তবে সেটি অল্পের জন্য সাইডবার ঘেষে বাইরে চলে যায়। ছয় মিনিটের ইনজুরি টাইমেও কোন পক্ষ উল্লেখ করার মতো সুযোগ সৃস্টি করতে পারেনি। ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই সন্তুস্ট থাকতে হয় দুই দলকে।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালের পর এর আগে পাঁচবারের প্রচেষ্টায় চার বারই বিশ^কাপের মূল পর্বে খেলতে ব্যর্থ হয়েছে মরক্কো । চার বছর আগে রাশিয়া বিশ^কাপে একমাত্র মূল পর্বে খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছিল দলটির। ঐ আসরে গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল দলটি ।
পর্তুগালের কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হবার পর স্পেনের বিপক্ষে পুরো ৯০ মিনিট পর্যন্ত ২-১ গোলে এগিয়ে থেকেও ইনজুরি টাইমে গোল হজম করে ইতিহাসের অন্যতম বড় অঘটনের সাক্ষি হতে পারেনি তারা। ২-২ গোরেল ড্রয়ের সুবাদে এক পয়েন্ট পেয়েছিল মরক্কো।
এবার তারা পাঁচ ম্যাচে অপরাজিত থেকে আত্মবিশ^াস নিয়েই বিশ^কাপ খেলতে এসেছিল। প্রস্তুতি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা, চিলি ও জর্জিয়ার বিপক্ষে জয়ী হবার পর সেপ্টেম্বরে প্যারাগুয়ের সাথে গোলশুন্য ড্র করে তারা।
এদিকে চার বছর আগে ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ৪-২ গোলে পরাজিত হওয়ার হতাশা শেষ পর্যন্ত কাটিয়ে উঠতে পারলনা ক্রোয়েশিয়া। ঐ ম্যাচের পর আজ বিশ^কাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমে পয়েন্ট ভাগাভাগি করল ক্রোয়েটরা।