দলের নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও নিজেদের মধ্যে সংঘাতে না জড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘ছোটখাটো বিষয় নিয়ে এখন নিজেদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করবেন না। খুব কষ্ট হয় যখন দেখি, একদিকে আমার গুলিবিদ্ধ ভাইয়ের লাশ পড়ে আছে মর্গে, অন্যদিকে আপনারা এখানে কমিটি নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়াচ্ছেন। এটা করা যাবে না।’ রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে বিএনপি এ মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। এর আগে সকালে যখন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে মিলাদ মাহফিল চলছিল, তখন ভোলার চরফ্যাশন থানা যুবদলের নতুন কমিটিতে পদ না পেয়ে কিছু নেতাকর্মী বাইরে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে তারা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজপথে আমরা জীবনপণ লড়ছি। আমাদের ভাইয়েরা জীবনোৎসর্গ করছেন। জালিম শাসকের নির্দেশে পুলিশ মিছিল, সভা, সমাবেশে গুলি চালাচ্ছে। বুলেটবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া এক ভাই যখন মর্গে পড়ে আছে, তখন আপনারা সংঘাতে জড়াচ্ছেন। এটা খুব দুঃখজনক। গণতন্ত্র রক্ষার এ লড়াইয়ে আমাদের বিজয়ী হতে হবে। এর বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। সবাইকে জীবনবাজি রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুলিতে ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নয়নের মতো আরও অনেকে গণতন্ত্রের লড়াইয়ে প্রাণ দিয়েছেন। তারা জীবনোৎসর্গ করেছেন বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্য।’ তিনি বলেন, ‘৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। হত্যা করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে। তারপরও মানুষের মুক্তির জন্য কতটা আবেগ, কতটা আকুতি। মানুষ শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে মুক্তির আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। বিগত গণসমাবেশগুলো থেকে আমরা উপলব্ধি করেছি, গণতন্ত্র ফিরে পেতে জনগণের মাঝে আকাক্সক্ষা তৈরি হয়েছে।’ মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জয়নাল আবেদিন, আব্দুল কুদ্দুস, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, আবদুল সামাদ আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরফত আলী সপু, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এম এ মালেক, তাইফুল ইসলাম টিপু, মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান, ইয়াসীন আলী, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদারসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা অংশ নেন।