রাজনৈতিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে সভা-সমাবেশে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। তিনি বলেন, সম্প্রতি রাজনৈতিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে কিছু মানুষের আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এটি উদ্বেগের। এখানে যেন কোনো রাজনৈতিক সংঘর্ষ না ঘটে সেজন্য আমরা সবার প্রতি আহ্বান জানাই।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় গোয়েন লুইস জানান, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের কোনো ম্যান্ডেট নেই। তিনি বলেন, এটা (নির্বাচন) নিয়ে আমি কথা বলতে পারি না। কারণ এ বিষয়ে জাতিসংঘের কোনো ম্যান্ডেট (অনুশাসন বা আদেশ) নেই। এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্তের বিষয়। বাংলাদেশ সরকারের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, তবে বাংলাদেশ সরকার বা নিরাপত্তা পরিষদ চাইলে নির্বাচনে সহযোগিতা দেবে জাতিসংঘ।
যেকোনো সংকট উত্তরণে আলোচনায় বসার ওপর তাগিদ দেন গোয়েন লুইস। বলেন, আলোচনা বা ডায়ালগের কোনো বিকল্প নেই। রাজনৈতিক বিষয়গুলো ডায়ালগের মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন লুইস বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি আমরা সংহতি জানাই। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে জাতিসংঘ কাজ করছে। আমরা রোহিঙ্গা সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধান চাই। আমাদের উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছি।
তবে বৈশ্বিক এজেন্ডায় রোহিঙ্গা ইস্যু ধরে রাখা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বৈশ্বিকভাবে অনেক ইস্যু প্রতিনিয়ত সামনে আসছে। আফগানিস্তান ইস্যুর পরপরই সামনে এলো ইউক্রেন ইস্যু। এটি এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গা সমস্যা বৈশ্বিক এজেন্ডাতে ধরে রাখা ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি রোহিঙ্গা ইস্যুকে জিইয়ে রাখতে।
জাতিসংঘের আবাসিক দূত বলেন, জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের ৬ হাজার ৮০০ শান্তিরক্ষী রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের ৫০০ নারী শান্তিরক্ষী রয়েছে। এটা খুব ইতিবাচক।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য ডোনারদের দেওয়া ফান্ড থেকে জাতিসংঘের স্থানীয় অফিস ব্যবস্থাপনার জন্য মাত্র ৬ থেকে ৭ শতাংশ ব্যয় করে। বাকি অর্থ রোহিঙ্গাদের জন্য ব্যয় করা হয়। এ ব্যয়ে স্বচ্ছতা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব)-এর সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনউদ্দিন।