মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বিএনপির মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আছে। এরা কমে নেই।
কোনো রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা হয়নি। কিন্তু অনেক মুক্তিযোদ্ধা রাজাকারের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছে। তারা পাকিস্তান জিন্দাবাদের মতো বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধুর সংবিধানকে সাম্প্রদায়িকতার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করুন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আজকে শুধু মাদ্রাসাগুলোতে নয়, কেজি স্কুলেও জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না। বাস্তবতা এটা। অথচ সরকারের আইন আছে। এখনও কোনো রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জয় বাংলা স্লোগান, যা আইনে আছে, সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত, তা খুব সযত্নে অনেকেই এড়িয়ে যান।
তিনি বলেন, আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর এ অসাম্প্রদায়িক সংবিধান শুধু প্রবর্তনে নয়, একইসঙ্গে মানুষের মনোজগতে তা আনতে হবে।
ইতিহাসবিদ ও অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, এ অস্থিতিশীলতা বিএনপি অন্তর্ভুক্ত করেছে সংবিধানে। এ অস্থিতিশীলতা বিএনপি-জামায়াত তাদের মূল মন্ত্র হিসেবে নিয়েছে। এ অস্থিতিশীলতার সর্বশেষ শিকার হচ্ছে বিচারপতি মানিক। সংবিধানকে এ অস্থিতিশীলতা থেকে মুক্ত করতে যদি আমরা না পারি, তাহলে আমাদেরও আক্রান্ত হতে হবে। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে তা একেবারে মৌলবাদ হয়ে যাবে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কিছু বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও সমাজকর্মী এরমা দত্ত বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন ধর্ম দিয়ে সম্পর্কে বণ্টন করা যায় না। তারই প্রমাণ ছিল ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের দুঃখ-কষ্ট কিছুটা লাগব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা এ দিনটিকে একটি পবিত্র দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এর জন্য ধন্যবাদ জানাই।
আমি অনুরোধ জানাবো ৭২-এর সংবিধান যেন পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে, যেন নিয়মিত চর্চা করা যায়। আমি বাঙালি, কিন্তু আমার সব থেকে বড় পরিচয় আমি ধর্ম নিরেপক্ষতার ভিত্তিতে গড়া বাংলাদেশের সেই গর্বিত দেশের বাঙালি।
শিক্ষাবিদ ও শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, আজকে আনন্দের দিবস। আমরা একটা সংবিধান পেয়েছিলাম, আবার আমাদের একটা সংগ্রাম ছিল যে সংবিধান দিবস পালন করবো। সরকার ঘোষণা দিয়েছে এ দিবসটি জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা হবে। আমাদের লড়াইটা সফল হলো তার জন্য আমরা আজকে আনন্দিত।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রহমানের শ্রেষ্ঠ অবদান হলো এ দেশ প্রতিষ্ঠা করা। আর দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ অবদান হলো এ রাষ্ট্রের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান তৈরি করে দেওয়া। আজকে সেই সংবিধান ফিরে এলেও যদি না আমাদের মনোজগতে পরিবর্তন ঘটে। যতদিন এ মনোজগত থেকে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িকতার আধিপত্য নির্মূল করতে না পারবো, ততদিন সংবিধানের সবকিছু থাকলেও কোনো কাজ হবে না।
বিএনপির মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে মিথ্যাচার বন্ধে ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি অস্বীকার আইন’ নামে একটা আইন করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নবচেতনা /আতিক